‘সবাই শুরুতে নেট বোলার থাকে, চাচা পরে হইছে’

Tamim-Sujon-samakal-5eb905f2caaba

তামিম ইকবালকে নেটে বল করতে গিয়ে এক দূর্ঘটনার মুখোমুখি হতে যাচ্ছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তামিম সেই কথা ‍তুলে এনে বলেন, সুজন ভাই আজকে হয়তো বেঁচে থাকতেন না। নিউজিল্যান্ডে আমাদের একটা ঘটনা ঘটছিল। সুজন কথা কেড়ে নিয়ে বলেন, হ্যা, কথাটা আমি তোকে বলতাম।

সুজন জানান, তখন তো আমার বলে পেস নেই। তামিম সেজন্য আমাকে বললো ১৮ গজ থেকে বল করতে। জোরে খেলার জন্য। আমি কাছ থেকে বল করছি। ও একটা বল এতো জোরে ড্রাইভ করলো যে, আমি দ্রুত বসে পড়ারও সময় পেলাম না…। বলটা পিঠ ছুয়ে গেল এবং যেখানে লেগেছিল লাল হয়ে গিয়েছিল।

সুজনের কথা কেড়ে নিয়ে নাঈমুর রহমান দুর্জয় বলেন, ‘মানুষ (ক্যারিয়ারের) শুরুতে নেট বোলার হয়। আর চাচা শেষে নেট বোলার হইছে।’ হাসির রোল পড়ে গেল তামিমের উদ্যোগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক তিন অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজন ও হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমের লাইভ আড্ডায়।

হাবিবুল বাশার এবার সুজনকে নিয়ে নতুন টপিক ধরিয়ে দেন। জানান, আমাদের সময় নতুন খেলোয়াড় যখন আসত সুজন ভাইয়ের প্রথম কাজ ছিল তার সঙ্গে যোগাযোগ করা। দুর্জয় আবার কেড়ে নেন কথা, ‘তামিম, আসলে ‍সুজন ভাই অনেক নতুন ক্রিকেটারকে চিনতো আগে থেকে।’ সুজন হেসে বলেন, ‘কী বলবি আমি বুঝছি।’ দূর্জয় বলেন, ‘সুজন ভাই আসলে ক্ষ্যাপ খেলে বেড়াতো।’ আবার হাসির রোল। সুজনের স্বীকারোক্তি, ‘নোয়াখালি আর ফেনি ছাড়া, ওরা আমাকে নেয়ও নি, আমি খেলিও নি। এছাড়া মোটামুটি দেশের সব জায়গাতেই আমি খেলেছি।’

তামিমের সঙ্গে সাবেক এই তিন অধিনায়কের আড্ডায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের অতীত গৌরব নিয়ে অবশ্য দারুণ কিছু আলোচনা হয়। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেই জয়। ১৯৯৫ সালের এশিয়া কাপ। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফির ম্যাচ। এছাড়া বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা সেসময় কিভাবে অনুশীলন করতো। তাদের সুযোগ-সুবিধা কেমন ছিল এমন নানান আলাপ উঠে আসে।

নাঈমুর রহমান আলাপের মধ্যে জানান, দেশের বাইরে গেলে তাদের ভালো রেস্টেুরেন্টে খাওয়ার সুযোগ ছিল না। ভালো কোন রেস্টেুরেন্টে হয়তো একবেলা খেতেন তারা। ম্যাচ ফি ছিল না তেমন। অনেক সময় ক্রিকেটাররা সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া টাকা খরচ করে ঘোরাঘুরি করতো। এছাড়া বিদেশি যেসব বাংলাদেশিদের রেস্টুরেন্ট আছে তারা দাওয়াত করতো। তখন দাওয়াত পেলে তারা খুবই খুশি হতেন। কারণ একবেলার খাওয়ার খরচ বেচে যাবে।

এছাড়া তাদের বোলিং মেশিন ছিল না। বালতিতে করে পানি এনে তার সঙ্গে লেবু এবং চিনি মিশিয়ে হাত দিয়ে গুলে চার-পাঁচটা গ্লাস দিয়ে খেতেন তারা। সেই গল্পও বলেন সাবেক এই ক্রিকেটাররা। সুজন জানান, ঢিলে-ধলা জার্সি পরে খেলতো। এখনকার মতো না, গায়ে ফিট না হলেই কত অভিযোগ। তাদের জার্সি থ্রি কোয়ার্টারের মতো লাগত। বল করার সময় হাতা গুটিয়ে নিতে হতো বলেও উল্লেখ করেন সুজন।

Pin It