ঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে ৫শ কোটি ও কর্মসংস্থানকে আরও দু’হাজার কোটি টাকার আমানত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা ও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ আরও বাড়ানোর জন্য আরও ২ হাজার কোটি টাকা আমানত দেওয়া হবে। ২ হাজার কোটি টাকা বিশেষ আমানত দিয়ে দেবো।
‘আমাদের যুবক শ্রেণি যাতে বেকার হয়ে ঘুরে না বেড়ায় তার জন্য তারা সেখান থেকে ঋণ নিতে পারবে। নিজেরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে। অথবা যৌথভাবে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে।’
প্রবাসীদের জন্য ঋণ সুবিধা বাড়াতে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের আমানত বাড়ানো হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যারা প্রবাসী তারা কিন্তু আমাদের রেমিটেন্স পাঠায়। তারা যেন ঘরবাড়ি বিক্রি না করে ঋণ নিয়ে বাইরে যেতে পারে, বিদেশে যেতে পারে তাদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক নামে আরেকটি বিশেষ ব্যাংক আমরা প্রতিষ্ঠা করে দেই।
‘সেই ব্যাংকে আরও টাকা দেবো। সেই ব্যাংকেও আমরা আরও অতিরিক্ত ৫শ কোটি টাকা দেবো। এর আগে সেখানে আমরা ৪শ কোটি টাকা দিয়েছি। আমরা আরও ৫শ কোটি টাকা জমা করে দিচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা জানেন যে এখন প্রবাসে কাজের পরিধি সীমিত হয়ে গেছে। সেখানে বহু মানুষ কাজ হারাচ্ছে, অনেকে দেশে ফিরে আসছে। তারা আমার দেশের নাগরিক, তারা সেখানে কষ্ট করুক তা আমরা চাই না। ফিরে এসে এখানেও যাতে কিছু কাজ করে খেতে পারে, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়, শিল্পায়নে তারা যাতে সুযোগটা পায় সে জন্য তাদের ওই ব্যাংকে আরও ৫শ কোটি টাকা আমরা দিয়ে দিচ্ছি।
‘পাশাপাশি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আছে। সেখানে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ এই কর্মসূচি নিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য আমরা ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সেখানেও এই ব্যবস্থা করছি।’
অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার নগদ, বিকাশ, রকেট ও শিউরক্যাশের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হিসাবে সরাসরি এ নগদ অর্থ পাঠানো হচ্ছে।
এ সহায়তার জন্য ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতি পরিবারে চারজন সদস্য ধরা হলে এই নগদ সহায়তায় উপকারভোগী হবে অন্তত দুই কোটি মানুষ।
ভাতা পাওয়া উপকারভোগীদের তালিকায় রয়েছেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিক ও হকারসহ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেওয়া লকডাউন বা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্নআয়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
একই সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং/অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্বলিত বোতাম টিপে স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ সালের ২ লাখ ৯ হাজার ৬৭৪ জন শিক্ষার্থীর মাঝে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে উপবৃত্তি বাবদ ১০২ কোটি ৭৪ লাখ ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং টিউশন ফি বাবদ ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।