মধ্যরাতে ঘাটে বাঁধা ফেরিতে হাজারো মানুষের অপেক্ষা

munshiganj-ghat-180520-03

মধ্যরাতে হাজারো মানুষ অপেক্ষা করছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে বাঁধা ফেরিতে অপেক্ষায় রয়েছে ফেরি ছাড়ার।

ঈদের আন্তঃজেলায় যাতায়াতে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে গত কয়েকদিন ধরেই ঢাকা থেকে দক্ষিণের জেলামুখী মানুষের ঢল নামে। যার চাপ শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে পড়ে।

এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে সোমবার দুপুরে পূর্বঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হয় ফেরি চলাচল। এতে আটকা পড়া হাজারো মানুষ তখন থেকেই পারাপারের সুযোগের অপেক্ষায়।

সে সময় বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, সোমবার বিকাল ৩টা থেকে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যানের নির্দেশে এ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় কথা বলে এ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও সে সময় জানান তিনি।

হাজারো মানুষের পাশপাশি সে সময় শিমুলিয়া ঘাটে দুপুরে অন্তত ২শ ট্রাক এবং প্রায় ৫০টি ছোট যান পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।

তবে এই যানবাহনগুলো পার করার ব্যাপারে তখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি জানিয়েছিলেন।

আটকে পড়া যানগুলো গভীর রাতে পার করার পরিকল্পনা রয়েছে এমন কথা ঘাট এলাকায় অপেক্ষমান যাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেই সাথে অপক্ষেমান লোকজনও পার হবে এটাই তাদের আশা।

রাত সোয়া ১২টায় ফেরিঘাটের থাকা দু’টি ফেরিতে এ গাদাগাদি ভিড় করে মানুষদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

তবে মাওয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্য (আইসি) সিরাজুল কবির জানান, ফেরি ছাড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

“ফেরিতে বসে থাকা লোকজন বলছেন, ‘আমরা ফেরি বন্ধ না জেনেই এসে আটকে গেছি। ঢাকায়ও ফিরে যেতে পারছি না। তাই রোজার মধ্যে আমাদের এ কষ্ট বোঝাতে পারব না।”

সোমবার বিকাল ৩টায় শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটের ফেরি সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকেই তাদের বেশিরভাগ সেখানে আটকা পড়ে আছে।

স্থানীয়রা জানায়, মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন প্রবেশ পথে চেক পোস্ট বসানো হলেও গাড়ি না আসলেও ভেঙে ভেঙে মানুষ আসা থামেনি। বহু মানুষ জড় হতে থাকে। এরই মধ্যে কাঁঠালবাড়ি থেকে একটি রোরো ফেরি শিমুলিয়া ঘাটে নোঙর করে। তখনই হুমড়ি খেয়ে পড়ে অপেক্ষারত লোকজন। পদ্মা পাড়ি দিতে ফেরি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ট্রলার, লঞ্চ ও স্পিডবোট সবই বন্ধ। এরই মধ্যে আরও লোকজন ঘাটে এসে ভিড় করে। রাত ৯টার দিকে শিমুলিয়ার আরেক ঘাটে মাঝারি আকারের ফেরি ক্যামেলিয়া নোঙর করে। সেখানেও কয়েকশ মানুষ উঠে পড়ে। এখন দু’ফেরিই লোকে লোকারণ্য।

এদিকে, বিআইডব্লিউটিসির দায়িত্বশীলদেরও ফোন বন্ধ থাকায় মধ্যরাতে নতুন করে কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার কথা জানা যায়নি।

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি বন্ধ  

অনিশ্চিত অপেক্ষায় গাদাগাদি করে বহু নারী-পুরুষ-শিশু বসে আছে ফেরিতে। মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থাকার পরও ঘরমুখো এসব মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস না ছড়ানোর উদ্দেশ্যে বন্ধ ফেরিতে গায়ে গায়ে অপেক্ষমান যাত্রীরা সেই ঝুঁকির মধ্যেই রয়েছে।

Pin It