সশস্ত্র রোহিঙ্গাদের বাধার মুখে গুলিবর্ষণ করে পিছু হটতে বাধ্য হলেন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তার সঙ্গের ফোর্স। বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় এক রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রোহিঙ্গাদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৩ জন আহত হয়েছে।
স্থানীয় রোহিঙ্গারা জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং মেগা ৪টি ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সিআইসি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপ সচিব মো. খলিলুর রহমান খান ২/ইস্ট নং ক্যাম্পে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে যান। ২/ইস্ট ও ৭ নং ক্যাম্পের সীমানা উখিয়া টিভি রিলে কেন্দ্রের পশ্চিমে কিছু রোহিঙ্গা নতুনভাবে বাজার বসানোর জন্য স্থাপনা বানাচ্ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুতুপালং ক্যাম্পের এক কর্মচারী জানান, ক্যাম্পের একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রুপের তত্বাবধানে নতুনভাবে বাজার বসানোর কাজ করছিলেন শতাধিক রোহিঙ্গা। সেখানে কাঁচা দোকানের পাশাপাশি ইট দিয়ে সেমিপাকা দোকানও নির্মাণ করা হচ্ছিল। কুতুপালং ক্যাম্পের সিআইসির নেতৃত্বে পুলিশ ও ব্যাটালিয়ান আনসারসহ রোহিঙ্গা ভলেন্টিয়াররা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে যান।
রোহিঙ্গারা জানান, সিআইসি ২/ইস্ট ক্যাম্পের ডি- ব্লকে গিয়ে বাজারের স্থাপনা উচ্ছেদ করতে চাইলে সন্ত্রাসীরা তাকে এবং আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের ঘিরে ফেলে। এরপরও সিআইসি উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যেতে চাইলে চারদিক থেকে ঘিরে তাদের ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। এ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে সিআইসি ফিরে যান। এসময় সিআইসি ও আইন শৃংখলাবাহিনীর ২ সদস্য আহত হন।
হামলার শিকার উখিয়ার কুতুপালং (পূর্ব) ক্যাম্পের সিআইসি (ইনচার্জ) ও উপ সচিব মোহাম্মদ খলিলুর রহমান খান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পের ভেতরে অবৈধভাবে ইট দিয়ে কিছু রোহিঙ্গা দোকান নির্মাণ করেছিলেন। এসময় বাঁধা দিলে কেউ কথা শোনেনি। পরে আনসার বাহিনী ও ভলান্টিয়ার নিয়ে ক্যাম্পের অবৈধ স্থাপনা ও দোকানের দেয়াল ভেঙে দেওয়া হয়। এসময় ২০-৩০ জন রোহিঙ্গার একটি দল দা, ছুরি, ইট ও লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় কয়েকজন ভলান্টিয়ার আহত হন। পরে আনসার বাহিনীর সদস্যরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করলে তারা পালিয়ে যায়।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ক্যাম্পে সরকারি দায়িত্ব পালনকারী সিআইসিসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর ওপর রোহিঙ্গারা হামলা করেছে। এঘটনায় এক রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে।
হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন।