সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন পদ্ধতি রহিত করে পুনরায় সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও আদতে জাতীয় সংসদে এখন ‘সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জাতীয় পার্টির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদেরকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “১৯৯০ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পরে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
“আমি বিশেষজ্ঞ নই। তবুও আমার মনে হয়েছে, আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে এতে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সংসদীয় এক নায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতা একজনের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে।”
‘গণতন্ত্র সুসংহত’ করতে সংসদীয় গণতন্ত্রের বিষয়টি এখন থেকেই চিন্তা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত-সমালোচিত এরশাদ সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় আশির দশকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আট বছর দেশ শাসন করে ১৯৯০ সালে গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন।
নানা কেলেঙ্কারি আর রাজনীতিতে একের পর এক ‘ডিগবাজি’ দিয়ে আলোচিত এরশাদ বিতর্কের মধ্যেও জাতীয় পার্টি নিয়ে টিকে ছিলেন রাজনীতিতে। সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় গত বছর ১৪ জুলাই মারা যান এরশাদ।
আলোচনায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, “১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ২১ বছর পরে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছি। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ কর্মীরা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করছে, এটা দুঃখজনক।”
শনিবারের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুরুল হোসেন মঞ্জু, যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ আবু তৈয়ব, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমসহ আরও অনেকে।