চলমান বন্যায় দেশের মানুষের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২০ জুলাই) মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বন্যায় ত্রাণসহ অন্য কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে এই নির্দেশনা দিয়েছেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সচিবালয় প্রান্তে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় সভাপতিত্ব করেন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অনলাইনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিকের প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজ বন্যা নিয়ে একটু আলোচনা হয়েছে। বন্যাটা নিয়ে আমরা যেন একটু সবাই প্রস্তুত থাকি।
‘মন্ত্রিসভায় অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। রিলিফ, রেসকিউ অপারেশন- এগুলো কীভাবে হচ্ছে? উনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেখা যাচ্ছে যমুনা ও পদ্মার পানি, মেঘনার পানি আসছে না। মেঘনার পানি যেটা ছিল সেটা ফ্লাশ ফ্লাডের পানি ছিল ৬/৭ দিন। যমুনা দিয়ে পানি বেশি আসছে।
‘অলরেডি জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্বাস্থ্য বিভাগ- তারা এ বিষয়ে প্রস্তুত। আমরাও রেগুলার মনিটর করছি। ’
প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন- প্রশ্নে তিনি বলেন, হ্যাঁ এটাই।
‘যাতে কোনোভাবেই মানুষের কোনো ক্ষতি না হয় রিলিফের যেন কোনো ঘাটতি না হয়। বিশেষ করে মানুষ যারা চরে থাকে, এরাই বন্যার সময় বাঁধের দিকে চলে আসে। যে স্কুলগুলো আছে সেখানে চলে এসেছে। সেখানে যেন তাদের জীবন-জীবিকা বা খাওয়া-দাওয়া অসুবিধা না হয় এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট যেন…। ’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা হেডকোয়ার্টারে থাকবে এবং ইউনিয়ন লেভেলে যারা কাজ করে তারা যেন সব সময় এলাকায় থাকেন।
তিনি বলেন, পদ্মায় ৬ দশমিক ৭ মিটার পানি হাই। নরমালি থাকে ১ মিটার। আর বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে পানি। পানির স্পিড বেশি, ৩ দশমিক ২ থেকে ৩ দশমিক ৩। ৩ দশমিক ৩ হলো, একটা জিনিস যদি রাখেন তাহলে এক সেকেন্ডে ২০ ফুট দূরে চলে যাবে। ওখানে শুধু পানি হলে প্রবলেম ছিল, না পানির সঙ্গে অনেক উপাদান রয়েছে। এভাবে যদি যায় তাহলে একদম সব ম্যাসাকার করে নিয়ে যাবে। শুধু পানি থাকলেও এটা কম থাকে যদি পানির সঙ্গে মাটি থাকে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আগে সেতু বিভাগের থাকার সময়ে পদ্মায় কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, সে বিষয়ে আমার প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা রয়েছে।
ট্রাভেল এজেন্সি ভিসা-রিক্রুটিং করলে জেল-জরিমানা
আইন লঙ্ঘন করে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ভিসা বা রিক্রুটিং কাজ পরিচালনা করলে অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ট্রাভেল এজেন্সিগুলো ডুয়েল ফাংশন করে ফেলে। তার কাজ হলো শুধু মানুষের টিকিট করে দেওয়া। কিন্তু রিক্রুটিং, অ্যাপয়মেন্ট, ভিসা নিয়ে অনেক ট্রাভেল এজেন্সি হ্যান্ডেল করে। যার ফলে আইনগতভাবে তাদের ধরা যেত না এতদিন। কিন্তু এখন থেকে নিশ্চিত হবে যে ট্রাভেল এজেন্সি ভিসা বা রিক্রুট হ্যান্ডেল করতে পারবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ট্রাভেল এজেন্সির কাজ সুস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তারা শুধু ভিসা করবে।
তিনি বলেন, আইন বা বিধিমালা লঙ্ঘন করলে অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে—এরকম বিধান রাখা হয়েছে। এটা করা হয়েছে এ কারণে যে, অনেক সময় ট্রাভেল এজেন্সি রিক্রুটিং এজেন্সি হিসেবে কাজ করে, এতে আর করতে পারবে না। যদি করে তাহলে তাকে জরিমানা দিতে হবে। কারণ, রিক্রুটিং এজেন্সির রেজিস্ট্রেশন আলাদা।
অনুমোদন সাপেক্ষে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো দেশে-বিদেশে শাখা খুলতে পারবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের সংশোধনীতে ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন হস্তান্তর এবং শাখা কার্যালয় স্থাপনের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। আগে হস্তান্তরের কোনো বিধান ছিল না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আগে নিবন্ধনের দরখাস্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফলো না করলে তা বাতিল হয়ে যেত। এখন প্রভিশন রাখা হয়েছে- দরখাস্ত করার পর ভ্যালিড কারণে ফলো করতে না পারেলে পরবর্তীতে জরিমানা দিয়ে আবার ছয় মাস পর্যন্ত সময় পাবে। একই সাথ মামলা নিষ্পত্তি করতে সিআরপিসি থাকবে।