বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারীর বাবুর বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, “বাবুর এভাবে মৃত্যু- এটা আরেকটা সত্য উতঘাটিত করেছে যে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারেই ভঙ্গুর। এখানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি যে মানুষ আস্থা রাখতে পারে না- বাবুর অসুস্থতা, তার চলে যাওয়া এটাই প্রমাণ করে।
“অনেকে অভিযোগ করে, বাংলাদেশের মানুষ বাইরে চিকিৎসা করতে যায় কেন, এজন্য যায় যে, এখানে ডায়াগনোসিস করা সম্ভব হয় না….সমস্ত ব্যবস্থাটা… ইট সেলফ রোগীদের জন্য একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।”
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু।
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট থাকায় সোমবার দুপুরে বাবুকে প্রথমে ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে রাত দেড়টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
শফিউল বারী বাবুকে ‘মেধাবী’ নেতা হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, “বাবুর মতো একজন জনপ্রিয়, সচেতন রাজনৈতিক নেতা এভাবে চলে যাবে এটা আমরা কল্পনাই করতে পারিনি। তার অল্প সময়ের জীবনের ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্য। তাকে শুধু বিএনপির জন্য নয়, দেশের জন্য, মানুষের জন্য প্রয়োজন ছিল।
“তিনি এদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা ব্যতিক্রম। আমি কিছুক্ষণ আগে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলাম- দুইটা বাচ্চা রেখে গেছে। মাথা গোজার ঠাঁইটুকু নাই। এখনও ভাড়া বাসায় থাকেন। তার স্ত্রীও কাজ করছিল এখন তাকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আমার একটাই অনুরোধ থাকবে আমার সকলের কাছে- তার পরিবার, স্ত্রী-সন্তানদের আমাদের নিজেদের মানুষ মনে করে আমরা যেন এগিয়ে আসি এবং সহযোগিতার হাত বাড়াই।”
দুপুর নিউ ইস্কাটনে শাইনপুকুর অ্যাপার্টমেন্টে শফিউল বারী বাবুর বাসায় গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বাবুর স্ত্রী বিথীকা বিনতে হোসাইনের সঙ্গে বলে সমবেদনা জানান।
বাবুর ছোট দুই ছেলে-মেয়ে ফাতেমা বারী তুহিন ও আয়হান বারী সাঈদকে কাছে নিয়ে আদর করেন মির্জা ফখরুল।
এ সময়ে বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নয়া পল্টন কার্যালয়ে দোয়া
সকাল সাড়ে ১১টায় কার্যালয়ের নিচতলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে শফিউল বারী বাবুর জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আাবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান জুয়েল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আকরামুল হাসান, যুব দলের মোরতাজুল করীম বাদরু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।
রিজভী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাবুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “এখন চারিদিকে যে দুর্দিন চলছে, এই দুর্দিনে শফিউল বারী বাবুও সামনের কাতারে থাকত। দুর্দিনের একজন বলিষ্ঠ সিপাহসালারকে আন্দোলনের কাফেলা থেকে আমরা হারালাম।”