প্রধানমন্ত্রীর কথায় নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানের নাম ও পদের নাম পাল্টাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার দুপুরে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব একথা বলেন
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের এখন কোনো কাজ নাই। নির্বাচনকে তো তারা গোরস্থানে পাঠিয়েছে, দিনের ভোট রাতে করছেন। এখন উনি (প্রধান নির্বাচন কমিশন) ইউনিয়ন পরিষদকে পল্লী পরিষদ করবেন, উনি উপজেলা চেয়ারম্যানকে উপজেলা পিতা করবেন, সিটি মেয়রকে মহানগর পিতা করবেন …..।
“উনি এদেশের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য যে প্রতিষ্ঠান, যে পদ্ধতিগুলো সেটা পরিবর্তন করছেন শেখ হাসিনার কথায়। অন্যান্য কোনো রাজনৈতিক দলের মতামত নিচ্ছেন না।”
স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠান সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের নাম বাংলায় রুপান্তর করে বিদ্যমান আইন সংস্কার সোমবার বিকালে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে বসবে। এই বৈঠকের এই সংস্কার প্রস্তাবের খসড়া অনুমোদনের উপস্থাপন করা হবে।
আইন সংস্কারের বিষয়ে মতামত নিতে গত জুলাই মাসে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব ওয়েব সাইটেও প্রকাশ করেছিলো নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এ বিষয় মতামত চাওয়া হলেও বিএনপিহ অধিকাংশ রাজনৈতিক করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে এই ধরনের সংস্কারের না করার পক্ষে মত দেয়।
‘জনগণকে মৃত্যুকূপে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে’
গত কয়েকদিন উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে রিজভী বলেন, “বাংলাদেশে আমরা একটা মরণযজ্ঞের মধ্যে আছি। কয়েকদিন আগে আমি উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা সফর করেছি, যে বাড়িতে গেছি শুনেছি সেখানে মারা গেছে কোভিড-১৯ এ। সরকার গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। মফস্বলের হাসপাতালগুলোতে কোনো চিকিৎসা নেই। ওখানে হাসপাতালে যাওয়া মানে মৃত্যুর নিশ্চিত সার্টিফিকেটে পকেটের মধ্যে করে নিয়ে যাওয়া। এর বাইরে অন্য কিছু নেই।
“এই সরকার শুধুমাত্র ক্রসফায়ার, গুম, খুনের মধ্য দিয়ে একটা অমানবিক, মনুষ্যত্বহীন রাজনৈতিক সংস্কৃতিই শুধু চালু করেনি, তারা গোটা দেশের জনগনের মৃত্যুকূপে ঠেলে দেয়ার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করেছে।”
তিনি বলেন, “আজকে তারা (সরকার) মেগা প্রজেক্ট করেন, আজকে ফ্লাইওভার করেন, টাকা চলে যায় কানাডায়, টাকা চলে যায় মালয়েশিয়ায়, শুনি বেগম পল্লী, শুনি সেকেন্ড হোমের কথা। আর বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে করোনায় সংক্রামণে ধুকে ধুকে মরছে সাধারণ মানুষরা। আর করোনার আক্রমনে মানুষ রাস্তায় মারা যাচ্ছে, হাসপাতালের বারান্দায় মারা যাচ্ছে।
“সবচাইতে ভয়াবহ কাণ্ড হচ্ছে যে, নেগেটিভ করোনা পরীক্ষায় বলে দিচ্ছেন করোনা পজেটিভ, পরীক্ষায় পজেটিভ বলে দিচ্ছেন নেগেটিভ। এই প্রতারণা, জ্বাল-জালিয়াতি প্রত্যেকটার সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক আছে, আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটে লোক, আওয়ামী লীগের টকশোয়ার- এরা হচ্ছে সব এই সরকারের লোকজন। সমস্ত অমানবিকতার জন্মদাতা হচ্ছে এই সরকার।”
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খানের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এই দোয়া মাহফিল হয়।
ছাত্র দলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের পরিচালনায় সাবেক ছাত্র নেতা খায়রুল কবির খোকন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহিদুল ইসলাম বাবুল, আকরামুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।