দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬১৭ জন।
বৃহস্পতিবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ২ হাজার ৬১৭ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৬৯ হাজার ১১৫ জন হল।
আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৪৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৫৭ জনে দাঁড়াল।
আইইডিসিআরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৭৮২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭১ জন হয়েছে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, তা আড়াই লাখ পেরিয়ে যায় গত ৭ অগাস্ট। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ১২ অগাস্ট সেই সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের ৩১ জন পুরুষ এবং ১৩ জন নারী। ৪১ জন হাসপাতালে এবং ৩ জন বাড়িতে মারা গেছেন।
তাদের মধ্যে ২৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
১৯ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভঅগের, ৭ জন খুলনা বিভাগের, ৩ জন বরিশাল বিভাগের, ৪ সিলেট বিভাগের, ২ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৩ হাজার ৫৫৭ জনের মধ্যে ২ হাজার ২,৮১৩ জন পুরুষ এবং ৭৪৪ জন নারী।
তাদের মধ্যে ১ হাজার ৬৯১ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ হাজার ৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪৮৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২২৭ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৯১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩৪ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।
এর মধ্যে ১ হাজার ৭০০ জন ঢাকা বিভাগের, ৮২৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২২৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ২৭৮ জন খুলনা বিভাগের, ১৩৮ জন বরিশাল বিভাগের, ১৬৬ জন সিলেট বিভাগের, ১৪৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ৭৮ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৮৭টি ল্যাবে ১৩ হাজার ১৬২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৯০১টি।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হলেন মীরজাদী ফ্লোরা
অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে তিনি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৩ আগস্ট, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। আগামী ২০ আগস্ট থেকে পদায়নের এ আদেশ কার্যকর হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, বর্তমান অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক হোসনে আরা তহমিন আগামী ১৯ আগস্ট অবসরে যাচ্ছেন। এরপর অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সেই দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রসঙ্গত, ফাউন্ডেশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের ফেলো হলেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। এরপর জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) থেকে রোগতত্ত্বে স্নাতকোত্তর এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৬ সালে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।