ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ

230503Laura-Stone_kalerkantho_pic

কৌশলগত (স্ট্র্যাটেজিক) ভৌগলিক অবস্থান, জোরালো উৎপাদন ক্ষমতা ও বিশাল বাজারের কারণে যুক্তরাষ্ট্র তার ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে’ বাংলাদেশকে অনেক গুরুত্ব দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে একথা জানান।

ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি লরা স্টোন বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্যাপক সম্ভাবনা ও সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্র ও এর কম্পানিগুলোর সুবিধা ও প্রয়োজনকে তারা স্বাগত জানায়।’

অন্যদিকে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উপমিশনপ্রধান জোয়ান ওয়াগনার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিতভাবেই জেগে উঠছে এবং বাংলাদেশকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে স্বীকার করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে যে সুযোগ আছে তা অবিশ্বাস্য। বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি’ অন্য কোনো দেশকে ঠেকানোর উদ্যোগ—এমন ভাবনা নাকচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওই দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

লরা স্টোন বলেন, অন্য কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়ন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনো ইস্যু নয়। ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির উদ্দেশ্য চীন বা চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)’ মোকাবেলা করা নয়। এটি উন্মুক্ত, স্বাধীন ও সবাইকে নিয়ে চলার একটি লক্ষ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির আওতায় বাংলাদেশের সঙ্গে জোরালো ও নিবিড় সম্পর্ক গড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাঁরা বড় পরিসরে অংশীদারি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

রোহিঙ্গা ইস্যু আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে বাধা কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে জোয়ান ওয়াগনার বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অগ্রাধিকার এবং এটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সব সময় কাজ করছে। বাংলাদেশ যেভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য নিজেদের হৃদয় উন্মুক্ত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রশংসা করে।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে সহায়তা করতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসইভাবে ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি করতে আমরা মিয়ানমারকে অব্যাহতভাবে চাপ দিচ্ছি।

নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও অংশীদারের সঙ্গে কাজ করছি। অর্থবহ অস্ত্রবিরতি ও রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আমরা নিউ ইয়র্ক, দ্য হেগ ও জেনেভায় কাজ করছি।’

লরা স্টোন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশের কাঁধে যে বোঝা চেপেছে তা আমরা পুরোপুরি অবগত। আমরা স্বল্প মেয়াদে প্রয়োজন ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য কাজ করছি। অপরাধীদের অনির্দিষ্টকাল ধরে তৎপরতা চালাতে দেওয়া হবে না। দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই সমাধানের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর সঙ্গে কাজ করছি।’

Pin It