আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় বিএনপিকে সহযোগী শক্তি হিসেবে চায় বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ওপর খাতওয়ারি আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “সরকার বিএনপিকে শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখতে চায়। পেতে চায় গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় সহযোগী শক্তি হিসেবে।”
তিনি বলেন, “কোনো দলকে রাজনীতি বিমুখ করা শেখ হাসিনার সরকারের কাজ নয়। কোনো দল অন্য দলকে বিরাজনীতিতে নিতে পারে না যতক্ষণ ওই দল জনগণের কথা বলে, জনসংশ্লিষ্ট কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকে। বিএনপপির জনবিরোধী ভূমিকা তাদের আত্মবিশ্বাসে চির ধরিয়েছে।
“তাই তারা বিরাজনীতিকরণের কথা বলছে। তাদের সিনিয়র নেতারা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থায়। নেতারাই বলছে, বিএনপি একটি কোমরভাঙা দল। দলের মহাসচিবের বাসায় হামলা করেছে কর্মীরা। তাই বলব সরকারের দূরতম কোনো ইচ্ছ নেই বিএনপিকে দুর্বল করার। বিএনপি নিজেই নিজেদের ক্ষতির জন্য যথেষ্ট।”
সরকার বিরাজনীতিকরণ তো নয়ই বরং গণতন্ত্রের স্বার্থে আরও সক্ষম এবং শক্তিশালী বিরোধী দল চায় বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। জনগণের আস্থা নিয়েই এগিয়ে চলেছে সমৃদ্ধ আগামী নির্মাণে। এ অগ্রযাত্রায় বিরোধীদলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিএনপি তাদের ভুল রাজনীতির খেসারত দিতে গিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর।
“নির্বাচনেকে ভয় পেয়ে যারা নির্বাচনের দিন সরে দাঁড়ানোকে অভ্যাসে পরিণত করেছে তারা জনগণ থেকে স্বাভাবিকভাবেই বিচ্ছিন্ন হবে। হঠকারিতাই তাদেরকে জনগণ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। এ বিচ্ছিন্নতা বুঝতে পেরে বিএনপি বিরাজনীতিকরণের কল্পিত অভিযোগ আনছে সরকারের বিরুদ্ধে।”
সড়ক নিয়ে সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনা দলিলে আগামী ৫বছরে সড়ক বিভাগের আওতায় ৫৫০ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করা এবং সেতু বিভাগের আওতায় চলমান ৬ টি ছাড়াও ১৫টি প্রকল্প পরিকল্পনায় নেয়া হয়েছে।
গত বারো বছরে প্রায় সাড়ে চারশ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হয়েছে। সে প্রায় সাড়ে চারশ’ কিলোমিটার চারলেনে উন্নীতকরার কাজ চলমান।
২০৩০ সালের মধ্যে ছয়টি মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে সরকার কাজ করছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, “একটি রুটের কাজ এগিয়ে চলছে, ২টি রুটের ভৌত কাজ শিগগিরই শুরু হবে এবং বিআরটি প্রকল্পের কাজও দ্রুত এগিয়ে চলছে।
“পদ্মা সেতুতে ইতিমধ্যে ৩৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে, যাতে দৃশ্যমান এখন ৫.১ কিলোমিটার। বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেলেরও ২টি টিউবের মধ্যে ১টির খনন কাজ শেষ হয়েছে। অপরদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ধাপের কাজ প্রায় ৫৬ ভাগ শেষ হয়েছে।”
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সিনিয়র সচিব সামসুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় সংযুক্ত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারসহ আইসিটি বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, দপ্তর প্রধানরা।