দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের অনুসন্ধানে থাকা আরও ২০ সংসদ সদস্যকে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ আইনের আওতায় আনা হবে বলে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটির কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান জানিয়েছেন।
কুয়েতে গ্রেপ্তার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের বিরুদ্ধে বুধবার অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়েরর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
কমিশনার মোজাম্মেল বলেন, “অনুসন্ধানে থাকা অন্যান্য এমপিদের বিষয়েও আমাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেটিও যথাসময়ে আমরা রেজাল্ট দিতে পারব।
“আমরা কোনো কাজে থেমে নেই। আমরা মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী চেষ্টা করি যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদেরকে আইনের সম্মুখীন করা হবে। এই ব্যাপারে কোনো বিলম্ব হবে না। শিগগিরই তা করা হবে। তবে টাইম বলা যাবে না।”
দুদক থেকে ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা কোনো ছাড় পাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে কোনো দল-মত নেই, ব্যক্তির উর্ধ্বে আমরা কাজ করি। আইন আমাদেরকে যেভাবেই নির্দেশ করে সেভাবেই আমরা কাজ করি।”
পাপুল ও সেলিনাসহ সাবেক ও বর্তমান ২২ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক।
তাদের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, খাস জমি দখল, ঘুষ গ্রহণ, কমিশন নেওয়া ও চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
তাদের মধ্যে ১১ জন বর্তমান এবং ১০ জন সাবেক সংসদ সদস্য।
সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১০ জন, বিএনপির পাঁচজন এবং অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র থেকে ছয়জন এমপি রয়েছেন। আওয়ামী লীগের তিন এমপির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে।
অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ১৪৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামের সাথে তাদের কন্যা ওয়াফা ইসলাম এবং পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের বিরুদ্ধে বুধবার মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন।
এই আসামিদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তারা আসামিদের গ্রেপ্তার প্রয়োজন মনে করলে তাদেরকে তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার করতে পারেন। এটা একটি চলমান আইনি প্রক্রিয়া।
“শুধু তাই নয়, মামলার তদন্তে যদি প্রয়োজন মনে হয় তাহলে কুয়েতের কারাগারে থাকা শহিদ ইসলাম পাপুলকে দেশে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে।”