মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ১ ও ২নং পিয়ারে বসানো হয়েছে ৩৮তম স্প্যান ‘ওয়ান-এ’। এতে দৃশ্যমান হল সেতুর পাঁচ হাজার ৭০০ মিটার অংশ। আর মাত্র ৩টি স্প্যান বসানো হলেই পূর্ণতা পাবে বহু আকাঙ্ক্ষিত এ সেতুটি।
শনিবার দুপুর আড়াইটায় স্প্যানটি বসানো হয়। ৩৭তম স্প্যান বসানোর ৯ দিনের মাথায় ৩৮তম স্প্যানটি বসানো হল। বাকি তিনটি স্প্যানের মধ্যে একটি চলতি মাসে ও অপর দুটি ডিসেম্বরে বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, স্প্যানটি ১৬ নভেম্বর বসানোর পূর্ব সিডিউল থাকলেও নির্ধারিত পিয়ার দুটির এলাকায় ড্রেজিং ও কারিগরি অন্যান্য বিষয় প্রস্তুত করতে আরও কয়েক দিন সময় লেগে যায়।
শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তিয়াইন-ই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৮তম স্প্যানটি নিয়ে রওনা করে ৯টা ৫০ মিনিটে নির্ধারিত পিয়ারের কাছে পৌঁছে।
এরপর ক্রেনটি নোঙর ও অন্যান্য কারিগরি কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা। পরে দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে স্প্যানটি নির্ধারিত পিয়ারের উপর ভূমিকম্প সহনশীল বিয়ারিংয়ে বসানো সম্ভব হয়।
চলতি মাসে এ নিয়ে সেতুতে মোট তিনটি স্প্যান বসানো সম্ভব হল। এ মাসের মধ্যেই ১০ ও ১১নং পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ডিসেম্বর মাসে ১১ ও ১২নং পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ এবং ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সেতু মন্ত্রণালয়।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হল ৩৮টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর পাঁচ হাজার ৭০০ মিটার অংশ।
৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। সব পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর আগামী ২০২১ সালেই খুলে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।