বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফেরানোর প্রত্যাশা নিয়েই স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে বছরজুড়ে অনুষ্ঠান করবে বিএনপি।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাচ্ছি গণতন্ত্রের আজকে কি অবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, গণমাধ্যমের কী অবস্থা- এটা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। আজকে মুক্তিযুদ্ধের সকল চেতনা ভূলুন্ঠিত।
“৫০ বছর পূর্তিতে আমাদের মূল থিম থাকবে, আমরা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফিরিয়ে নিতে চাই এবং সেই চেতনাকে আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এটা হবে বিএনপির সূর্বণজয়ন্তী উদযাপনের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।”
২০২১ সালে বছরব্যাপী নানা আয়োজনে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। কর্মসূচির মধ্যে থাকবে রচনা প্রতিযোগিতা, অংকন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা, জিয়াউর রহমানের কর্মসূচিভিত্তিক কর্মশালা, বিএনপির শাসনামলের সাফল্য, পুস্তিকা প্রকাশ, লিফলেট বিতরণ, ডকুমেন্টারি নির্মাণ, নৃত্যনাট্য, পথনাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, মহানগর-জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা।
মুক্তিযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “৫০ বছর পরে গণতন্ত্রের আজকে কী অবস্থা? শুধু ব্যক্তি স্বার্থে, ক্ষমতায় থাকার স্বার্থে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে হত্যা করা হয়েছে। এটা এবার প্রথম না, যারা আছে ক্ষমতায় তারা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে আগেই কিন্তু গণতন্ত্র হত্যা করেছিল।”
“আজকে যদি দেশের অর্থনৈতিক ইনডেক্সগুলো দেখা যায়, সারা পৃথিবীর হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যমূলক দেশ। এদেশে ধনী অনেক বেশি। এদেশে ধনী হওয়া দ্রুত গতিতে সম্ভব। এদেশে সম্পদের যে বিশাল বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে এই ১২ বছরের সরকারের সময়ে বিশেষভাবে, এটা জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাশা ছিল না, প্রত্যাশা ছিল সাম্যের। এদেশের সম্পদের যার যার সামর্থ অনুযায়ী, যার যার ক্ষমতা অনুযায়ী, যার যার উপযুক্ত অনুযায়ী সমান অধিকার পাবে। সেটা আমরা এখনো অর্জন করতে পারি নাই।”
খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আমরা আমাদের ব্যক্তি, রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলছি- সেটা বর্তমান ভূলুন্ঠিত। আজকে মিডিয়া সত্য কথা বলতে পারে না। সত্য কথা বললে গুম হয়ে যায়, সত্য কথা বললে হত্যা করা হয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল আমরা যার যার কথা বলব এবং শোনার জন্য ধৈর্য থাকতে হবে-এই স্বাধীনতা আজকে নাই।”
বিরোধী দলের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিরোধী দলের অবস্থা তো বোঝেন- আজকে ঘটনা ঘটলে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন, সাতদিনের মধ্যে চার্জশিট, ১৫ দিনের মধ্যে বিচার শুরু। আজকে সুপ্রিম কোর্ট থেকে নিম্ন আদালত পর্যন্ত বিচার ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণে-এটা সকলে জানে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।