স্বাধীনতার পরে অর্থশূন্য অবস্থায় শুরু হয়েছিল পথচলা। বিদেশ থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করার মতো কোনো অর্থ ছিল না। বিদেশি সাহায্যই ছিল একমাত্র ভরসা। তবে সে অবস্থায় বেশি দিন থাকতে হয়নি। সরকার ও উদ্যোক্তাদের উদ্যমের ওপর ভর করে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যেতে থাকে। বিজয়ের ৪৯তম বছর শেষে এখন পুরো চিত্রই পালটে গেছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত এখন ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়ার অর্থ হলো অর্থনীতির শক্তিশালী হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ রিজার্ভ দিয়ে কমপক্ষে ১০ মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা সম্ভব।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মঙ্গলবার দিন শেষে ৪২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভের পরিমাণ ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। অর্থাত্ চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের অর্ধেকের বেশি। চলতি বছরে বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা।
আরো পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেলেন সাকিব
জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর সময়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রপ্তানি ১৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার বেড়েছে। এই রপ্তানি রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তা করেছে। আর রিজার্ভ বাড়াতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে প্রবাসী আয়। চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে দেশে ১ হাজার ৯০ কোটি ৪৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশ মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।
রিজার্ভ বৃদ্ধি বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আমাদের জন্য অত্যন্ত সুখবর। এটি দেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। বিজয় দিবসের প্রাক্কালে এ ঘটনা অবশ্যই জাতির জন্য একটি উপহার।