অবশেষে শুভবুদ্ধির উদয় হলো ওয়াসার

image-211669-1609758650

রাজধানীর বেদখল হওয়া খাল পুনঃউদ্ধার ও ঢাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেছেন, এবার দায়িত্বটি সঠিক সংস্থার হাতে ন্যস্ত হল।

সোমবার ( ৪ জানুয়ারি) কাওরান বাজারে ওয়াসা ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তাকসিম বলেন, ৩২ বছর আগে এক ভুল প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের কাজটি ওয়াসাকে দেওয়া হয়েছিল। ওয়াসার পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষ, রাজউক, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সাতটি সংস্থা এই কাজে যুক্ত ছিল। এক কাজে অনেক সংস্থা যুক্ত থাকায় তা সঠিকভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়নি।

ঢাকার সুপেয় পানির বিপণন ও পয়ঃনিষ্কাশনকে ওয়াসার মূল কাজ হিসেবে উল্লেখ করে তাকসিম বলেন, চট্টগ্রাম, খুলনা ও অন্যান্য শহরগুলোতেও তাই হয়ে আসছে। কেবল ঢাকায় এই দুই কাজের সঙ্গে বৃষ্টির পানি ব্যবস্থাপনার কাজ যুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০০৯ সাল থেকেই ঢাকা ওয়াসা তাদের ওপর অর্পিত অতিরিক্ত এই দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার চিন্তা শুরু করে। ২০১২ সালে সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়ার পর আট বছরের মাথায় তা সফল হল।

২০০৯ সালে ওয়াসা অনুধাবন করে যে ১৯৮৮ সালের অধ্যাদেশটি ওয়াসার কাজের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই ২০১২ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়েকে অনুরোধ জানানো হয় যেন কাজটি সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের সময় কাজটি এগিয়ে গেলেও তার মৃত্যুর পর থেমে যায়। বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর এ নিয়ে ওয়াসা ও দুই সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই চুক্তি প্রক্রিয়ায় ঢাকা শহরের খাল ও ৩৬০ কিলোমিটার ড্রেনেজ সিস্টেম ওয়াসার হাত থেকে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে দেওয়া হয়েছে। আর আগে থেকেই ২৩০০ কিলোমিটার ড্রেনেজ সিটি করপোরেশনের কাছে ছিল।

ঢাকায় পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে ওয়াসার অধীনে থাকা অবস্থায় ঢাকার খালগুলো ধীরে ধীরে মৃত ও অকেজ হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ করে আসছিলেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে সেই প্রসঙ্গ এলে প্রকৌশলী তাকসিম তা স্বীকার করে নেন।

তিনি বলেন, একটি খালের বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও ওয়াসার দায়িত্ব ছিল কেবল খাল ব্যবহার করে পানি সরিয়ে দেওয়া। ফলে খালগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া খাল নিয়ে আলাদা কোনো বাজেটও ওয়াসার ছিল না। আমরা কেবল খাল থেকে সলিড বর্জ্য নিষ্কাশন করতাম। অথচ একটা খাল হতে পারে সুন্দর জলাশয়, খাল হতে পারে নৌপথ, আবার খালের দুই ধারে ওয়াক ওয়ে নির্মাণ করা যায়। এর কোনোটিই করার অধিকার আমাদের ছিল না। এসব কারণে খালের পূর্ণাঙ্গ রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়নি।

অন্যদের মধ্যে ওয়াসার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদ হোসেন, পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেম, পরিচালক (কারিগরি) শহিদ উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

Pin It