অ্যাসাঞ্জের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হলে তার ‘আত্মহত্যা করার’ ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে বিচারক সোমবার এই রায় দিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
অ্যাসাঞ্জের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং তার ‘আত্মহত্যা করার’ ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে বিচারক সোমবার এই রায় দিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
অ্যাসাঞ্জের নিজের ক্ষতি করা এবং আত্মহত্যা করার চিন্তার আলামত তুলে ধরে লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালতের ডিস্ট্রিক্ট জাজ ভ্যানেসা ব্যার্যাজার রায়ে বলেছেন, “এসবকিছুই বিষন্নতায় ভোগা এবং কখনও কখনও নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত একজন মানুষেরই লক্ষণ।”
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
ওই সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে গুপ্তচর আইন লঙ্ঘন ও সরকারি কম্পিউটারে হ্যাকিংসহ ১৮টি অভিযোগ এনেছে। দোষ প্রমাণিত হলে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতাকে কয়েক দশক কারাগারে কাটাতে হতে পারে।
অ্যাসাঞ্জকে বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই তাকে হস্তান্তরের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। তবে অ্যাসাঞ্জ এর বিরুদ্ধে লন্ডন আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছেন এবং এ মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কৌসুলিরা বলছেন, অ্যাসাঞ্জ গোপন নথি ফাঁস করে অনেকের জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। সেকারণেই যুক্তরাষ্ট্র তার হস্তান্তর চাইছে।
৪৯ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ কারাগারে আছেন। তাকে এখনও সেখানেই রাখা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের কারণে অ্যাসাঞ্জকে সেখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রাখা হয়েছে।
অ্যাসাঞ্জ লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আত্মগোপনে যাওয়ার পর জামিনের শর্ত ভঙ্গের জন্য ২০১৯ সালের মে মাসে তাকে ৫০ সপ্তাহের জেল দেওয়া হয়েছিল।
২০১৯ সালের এপ্রিলে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ২০১২ সাল থেকে ৭ বছর দূতাবাসেই লুকিয়ে ছিলেন। পালিয়ে দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার সময় তিনি যৌন নিপীড়নের মামলায় সুইডেনে হস্তান্তরের মুখে ছিলেন। পরে সেই মামলা খারিজ হয়।