যে খাবার তিনবেলা খেলে কমবে হৃদরোগের ঝুঁকি

whole-grains-reuters-220721-01

প্রক্রিয়াজাত সাদা আটা, ময়দা, বা চাল খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলে মিলবে সুস্থ হৃদয়।

সুস্থ থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে আর নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে, এই হলো মোটা দাগের সর্বজনীন সত্য।

তবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আর শরীরচর্চার নিয়ম আছে অসংখ্য। ভালো মন্দ বিবেচনা করে একটি পদ্ধতি বেছে নিয়ে সেটা শক্তভাবে মেনে চলতে হবে।

হৃদরোগ বিশ্বব্যাপি সবচাইতে বড় মৃত্যুর কারণগুলোর মধ্যে প্রথমসারির। তাই এর প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া সবার জন্য জরুরি। আর এজন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা দরকার।

১৩ জুলাই ‘দ্য জার্নাল অফ নিউট্রিশন’য়ে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশ পায়। ৩,১০০ জন অংশ নিয়েছেন এই গবেষণায়। তাদের সবারই বয়স পঞ্চাশের কোঠায় আর প্রত্যেকেই ১৮ বছর ধরে এই গবেষণায় তথ্য সরবরাহ করে আসছেন।

প্রতি চার বছর পর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। মাপা হয়েছে কোমরের বেড়, রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা আর জেনে নেওয়া হয়েছে তাদের খাদ্যাভ্যাস।

ফলাফলে জানা যায়, “যারা দিনে তিন ধরনের ‘হোল গ্রেইন’ বা পরিপূর্ণ শষ্যজাতীয় খাবার খেয়েছেন, তারাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সবচাইতে সফল।

‘ডায়েটারি গাইডলাইনস ফর আমেরিকানস ২০২০-২০২৫’ এর উদ্ধৃতি দিয়ে, তিনবারে কতটুকু খাবেন তার উদাহরণ দিতে গিয়ে গবেষকরা বলেন, “হোল গ্রেইন’ পাউরুটির এক ফালি, আধা কাপ ওটস সিরিয়াল, আধা কাট লাল চালের ভাত। একদিনের এতটুকুই হবে আদর্শ মাত্রা।”

বেস্টলাইফ ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা আরও বলেন, “এই আদর্শমাত্রার বেশি খেলেও ক্ষতি নেই বললেই চলে। বাড়তি ‘হোল গ্রেইন’ খেলেও রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমতে থাকবে। সম্পূর্ণ শষ্যের খাবার শুধু যে হৃদরোগের জন্যই উপকারী তা নয়। কোমরের বেড়ও কমায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায়, সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রাও।”

গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক, ডা. নিকোলা ম্যাককিওন বলেন, “স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে পরিপূর্ণ শষ্যজাতীয় খাবার বেছে নেওয়ার মাধ্যমে বয়স বাড়ায় সঙ্গে সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত সহজ হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয় যারা বেশি বেশি ‘হোল গ্রেইন’ খাবেন তাদের রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখাও হবে অনেক সহজ।”

“আর এসব সমস্যার সবগুলোই হৃদরোগ ডেকে আনে। তাই ‘হোল গ্রেইন’জাতীয় খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি দূর করে দেয়।”

গবেষকদের ব্যাখ্যা হলো, “যেকোনো শষ্যজাতীয় খাবার যখন প্রক্রিয়াজাতকরণে মধ্য দিয়ে যায় তখন এর ভিটামিনে ভরা খোলসের অনেকটাই হারিয়ে যায়। আর ‘হোল গ্রেইন’-জাতীয় খাবার হয় অপ্রক্রিয়াজাত, তাই শষ্যের সকল পুষ্টিগুণ এতে অটুট থাকে।”

গবেষণার আরেক গবেষক, হার্ভার্ড টি. এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথ’য়ের অন্তর্ভুক্ত ব্রিগহাম অ্যান্ড উইমেনস হসপিটাল’য়ের ‘পোস্ট ডক্টরেট রিসার্চ ফেলো’ ক্যালেই সাউয়িকি বলেন, “হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো আর কোমরের বেড় কমানোর ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ শষ্যজাতীয় খাবার নানানভাবে উপকারী।”

একদিকে এতে থাকে ভোজ্য আঁশ, যা পেট ভরা রাখে লম্বা সময়। এই আঁশ পানিতে দ্রবণীয় হওয়ায় খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা হুট করে বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে। অপরদিকে এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম আর ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তচাপ কমাতে কাজ করে।

Pin It