গ্রামাঞ্চলে থানকুনি পাতার ব্যবহার আদি আমল থেকেই চলে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে ঔষধি সব গুণ। থানকুনি পাতার রস রোগ নিরাময়ে অতুলনীয়। পেটের সমস্যা হলেই বয়োজ্যেষ্ঠরা এই পাতা ভর্তা খেতে দিতেন। এই প্রাকৃতিক উপাদানটি আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বেশ জনপ্রিয় হলেও, আধুনিক জীবনে সম্পূর্ণভাবে অবহেলিত হয়েছে। এটি পেট এবং মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষেত্রে দুর্দান্ত কার্যকর।
রোগ নিরাময়ে থানকুনি যথার্থ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।গবেষণায় দেখা গেছে কেউ যদি নিয়মিত থানকুনি পাতা খান, তাহলে মাথার চুল থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অংশের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।
চলুন যেনে নেওয়া যাক, থানকুনির গুণগুলো-
আমাশয় দূর করে
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়ম করে থানকুনি পাতা খেতে হবে। টানা ৭ দিন খেলে মামলা খালাস!
পেটের রোগের চিকিৎসা
পেটের সমস্যা কমাতে পারে পেটের রোগ নিরাময় করতে থানকুনি পাতা দুর্দান্ত কার্যকর। যেকোনও পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। থানকুনি পাতা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। পেটে আলসারের মতো রোগের প্রকোপ থেকেও স্বস্তি দিতে পারে। এছাড়া, পেট খারাপ বা ডায়রিয়ার চিকিৎসাতেও এই পাতাটিকে কাজে লাগানো হয়ে থাকে।
কাশির প্রকোপ কমে
২ চামচ থানকুনি পাতার রসের সঙ্গে অল্প করে চিনি মিশিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে কাশি কমে যায়। আর যদি এক সপ্তাহ খেতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই।
জ্বরের প্রকোপ কমে
জ্বরের ধাক্কায় কাবু হয়ে পড়েন অনেকে। তাদের থানকুনি পাতা খাওয়া জরুরি। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে- জ্বরের সময় ১ চামচ থানকুনি এবং ১ চামচ শিউলি পাতার রস মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে অল্প সময়েই জ্বর সেরা যায়।
চুল পড়ার কমে যায়
সপ্তাহে ২-৩ বার থানকুনি পাতা খেলে স্কাল্পের ভেতরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে চুল পড়া কমতে শুরু করে। পরিমাণ মতো থানকুনি পাতা নিয়ে তা থেঁতো করে নিতে হবে। তারপর তার সঙ্গে পরিমাণ মতো তুলসি পাতা এবং আমলা মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। সবশেষে পেস্টটা চুলে লাগিয়ে নিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। ১০ মিনিট পরে ভাল করে ধুয়ে ফেললেই হবে।
মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়
থানকুনি পাতা মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত উপকারি। থানকুনি পাতা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং বুদ্ধির ধারও বাড়ে। এছাড়াও থানকুনি পাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, এতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড বর্তমান। থানকুনি পাতা সেবনে অ্যালঝাইমার বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
ক্ষতের চিকিৎসা
শরীরের কোথাও কেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে অল্প করে থানকুনি পাতা বেঁটে লাগিয়ে দেবেন। দেখবেন নিমেষে কষ্ট কমে যাবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি
থানকুনি পাতা হজম ক্ষমতারও উন্নতি করে। থানকুনি পাতায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ যাতে টিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে না।
অবসাদ এবং উদ্বেগ রোধে করে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, থানকুনি পাতা মানসিক চাপ, বিষন্নতা, স্ট্রেস রোধের ক্ষেত্রে কার্যকরি। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা স্ট্রেস লেভেল কমায় এবং নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত রাখে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে নো প্রবেলম! থানকুনি পাতা কিনে আনুন বাজার থেকে। তাহলেই দেখবেন সমস্যা একেবারে হাতের মধ্যে চলে আসবে। আসলে এক্ষেত্রে একটা ঘরোয়া চিকিৎসা দারুণ কাজে আসে।
হাফ লিটার দুধে ২৫০ গ্রাম মিশ্রি এবং অল্প পরিমাণে থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে একটা মিশ্রন তৈরি করুন। তারপর সেই মিশ্রন থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খাওয়া শুরু করুন। এক সপ্তাহ করলেই হাতেনাতে মিলবে উপকার।