ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর এলাকায় ছোটো আকারে গড়ে ওঠা উদ্যোক্তা মোস্তাফিজুর রহমান শিমুলের তৈরি ব্লক পার্কিং টাইলসের কারখানাটি উঁকি দিচ্ছে বিরাট সম্ভাবনার। বর্তমানে নিজ জেলার গণ্ডি পেরিয়ে শিমুলের তৈরি এই পার্কিং টাইলস ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
শিমুল জানান, ২০১১ সালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে তিন বছর চাকরির পেছনে ছুটেও লাভ হয়নি। এরকম শিক্ষিত বেকার থাকাটাই নিজের কাছে নিজেকে বোঝা বলে মনে হচ্ছিল। শেষে হতাশ হয়ে ২০১৬ সালে প্রবাসে পারি জমান তিনি। শিমুল কাতারের একটি পার্কিং টাইলসের কোম্পানিতে চাকরি করতেন।
শিমুল বলেন, কাতারের সেই টাইলসের কোম্পানিতে আমি প্রায় তিন বছর কাজ করেছি। সে সময় খেয়াল করি, কারখানায় তৈরিকৃত পার্কিং টাইলসে ব্যবহৃত প্রধান কাঁচামাল সিমেন্ট, বালু ও নুড়ি পাথর যা আমাদের দেশ তথা নিজ এলাকাতেই বেশ সহজলভ্য। ছোটো আকারে শুরু করতে পুঁজিও তেমন লাগছে না। তখনি দেশে ফিরে এমন একটি কারখানা গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেই।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ থেকে কারখানা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করি। এরপর মাত্র দুই লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে ২০২১ এর ১ জানুয়ারিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করি পার্কিং টাইলসের। প্রথম থেকেই নিজ জেলায় ব্যাপক সাড়া পাই। আস্তে আস্তে পার্শ্ববর্তী জেলায় যাওয়া শুরু করে আমার পণ্য। তবে এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার পাচ্ছি।
তার কারখানায় বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়াটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন এই উদ্যোক্তা। এ বিষয়ে তিনি জানান, প্রথমে ১জন শ্রমিককে কাজ শিখিয়ে তাকে নিয়ে পথচলা শুরু করলেও এখন তার কারখানায় ১৭জন শ্রমিক কাজ করছেন। সরকারি সহযোগীতা পেলে এই কারখানাটি আরও বড় করার পরিকল্পনা আছে। তখন ১৫০/২০০ শ্রমিকের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব বলে মনে করেন এই উদ্যোক্তা।
শিমুলকে সরকারিভাবে সহযোগীতা করে তার কাজে উৎসাহ দেওয়া উচিত বলে জানান ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্সের পরিচালক মামুনুর রশিদ। তিনি জানান, শিমুলের মাধ্যমে বৃহত্তম কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে। তার সফলতা অন্যান্য তরুণদেরকে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম বলেন, বর্তমান সরকার উদ্যোক্তা তৈরিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা শিমুলের তৈরি টাইলস কারখানা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে শিমুলকে সহযোগীতা করব।