‘বাস ভাড়া ৪৬-৪৭ শতাংশ বাড়ানো দরকার’

image-484699-1636302780

ডিজেলের তেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানোর কারণে বাস ভাড়া ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ভাড়া আরও বেশি বাড়ানোর যুক্তি ছিল।

রোববার দীর্ঘ বৈঠকের পর বিকালে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান।

বৈঠকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ছাড়াও অন্য নেতারা ও ভোক্তাদের পক্ষে ছিলেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধিরা।

বৈঠকের শুরুতে দূরপাল্লার বাস ভাড়া ৪১ শতাংশ আর মহানগরে ৫০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেন পরিবহন মালিকরা।

বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেন, আট বছর ধরে বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। আমরা আজকে ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটির মাধ্যমে হিসাব করে দেখেছি, গত আট বছরের ভাড়া ও এখনকার তেলের দাম সমন্বয় করতে গেলে দূরপাল্লার বাসে ৪৭ শতাংশ ও মহানগরীতে ৪৬ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো দরকার।

যদি এই হারে ভাড়া বাড়ানোই যুক্তিযুক্ত ছিল, তাহলে কেন কম নির্ধারণ করা হলো, তার কথাও বলেন বিআরটিএর প্রধান।

তিনি বলেন, যেটা আবার সাধারণদের ওপর চাপ পড়ে। তাই ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তেলের হিসাবের সঙ্গে এই ভাড়া মেলালে চলবে না।’

বৈঠক শেষে জানানো হয়, ২০১৩ সালে নির্ধারিত দূরপাল্লার বাস ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ৪২ পয়সা থেকে ১ টাকা ৮০ পয়সা আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে করা হয়েছে ২ টাকা ১৫ পয়সা।

আর মহানগরীতে মিনিবাসে ১০ পয়সা কম অর্থাৎ ২ টাকা ৫ পয়সা করে ভাড়া নেয়া হবে। তবে সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া বাড়বে না।

অর্থাৎ দূরপাল্লার ভাড়া বেড়েছে ২৭ শতাংশ আর মহানগরে ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

সেই সঙ্গে জানানো হয়, মহানগরে মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ৮ টাকা আর বড় বাসের ১০ টাকা।

লঞ্চে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়াও বাড়ল

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ডাকা চলমান লঞ্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। লঞ্চের ভাড়া ৩৫ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানোয় এ ঘোষণা দিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।

লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, আজ (রোববার) রাত ৮টা থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু করবেন তারা।

রোববার রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে সরকারের সঙ্গে লঞ্চ মালিকদের বৈঠকে ভাড়া বাড়ানো ও ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।

বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেকের সভাপতিত্বে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

বর্তমানে ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত প্রতি কিলোমিটার লঞ্চ ভাড়া ১ টাকা ৭০ পয়সা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই দূরত্বে প্রতি কিলোমিটার লঞ্চ ভাড়া হবে ২ টাকা ৩০ পয়সা।

বর্তমানে ১০০ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বের দূরত্বে প্রতি কিলোমিটার আছে ১ টাকা ৪০ পয়সা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই দূরত্বের প্রতি কিলোমিটার ভাড়া হবে ২ টাকা।

এছাড়া জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ১৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাপ) সংস্থার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম  ও সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট বদিউজ্জামান বাদল, বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুর রহমান, বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা এবং লঞ্চ মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Pin It