যুদ্ধাপরাধ: বিএনপির সাবেক সাংসদ মোমিনের ফাঁসির রায়

abdul-momin-talukder-ed

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য বগুড়ার আব্দুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার ফাঁসির রায় দিয়েছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে।

পলাতক আব্দুল মোমিন তালুকদারের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগেই তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তাকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন আব্দুল মোমিন তালুকদার। তিনি বগুড়া-৩ আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন দুইবার।

রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন মামলাটির শুনানি করেন। আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আবুল হাসান।

দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ৩১ অক্টোবর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

যুদ্ধাপরাধের তিন অভিযোগ

>> ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে আসামি আব্দুল মোমিন তালুকদারসহ ৫ থেকে ৬ জন স্বাধীনতাবিরোধী ও ২০ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্যকে নিয়ে বগুড়া জেলার আদমদিঘী থানার কলসা বাজার, রথবাড়ী এবং তিয়রপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা করতে অপারেশন চালান। ওই দিন আসামি নিজে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কলসা গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ইসলাম উদ্দিন প্রামানিকসহ হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেন।

>> ১৯৭১ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে একই থানার কাশিমালা গ্রামের ১৬ থেকে ১৭টি বাড়ি লুট করেন মোমিন। সেদিন ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করে হত্যা করা হয়।

>> ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে আব্দুল মোমিন তালুকদার রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নিয়ে আদমদিঘী থানার তালশন গ্রামের অভিযান চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেন।

২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে এ মামলাটির তদন্ত কাজ শুরু করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা জেডএম আলতাফুর রহমান।

এ মামলায় জব্দ তালিকা ছাড়াও ২৯ জনকে ঘটনার স্বাক্ষী করা হয়। বিচারের সময় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে আবদুল মোমিন তালুকদার বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বও পান তিনি।

তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুইবার বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেসময় তিনি বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি এবং রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

Pin It