সাকিব-রফিকের ওপরে তাইজুল

image-20564-1638104826

আগের দিন বিনা উইকেটে ১৪৫ রান তুলে প্রথম ইনিংসে রান চূড়ায় উঠার আভাস দিয়েছিল পাকিস্তান। উইকেটশূন্য দিনের পর বাংলাদেশের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ। রবিবার (২৮ নভেম্বর) ম্যাচের তৃতীয় দিনে ত্রাতা হয়ে ধরা দিলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। সাগরিকায় প্রথম দুই সেশনে কার্যত ‘তাইজুল বনাম পাকিস্তান’ লড়াই মঞ্চস্থ হয়েছে। তাতে জয়ীর হাসি বাংলাদেশি স্পিনারের।

পেস বোলার এবাদত হোসেন অবশ্য নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন এ বাঁহাতি স্পিনারকে। তবে দিনের আলো পুরোটাই কেড়ে নিয়েছেন তাইজুল। বল হাতে সাগরিকায় গড়েছেন দারুণ কীর্তি। তার ঘূর্ণি বিষে নীল হয়েছে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন। একাই ধসিয়ে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইন। ১১৬ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। যা ক্যারিয়ারে তার দ্বিতীয় সেরা বোলিং। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৩৯ রানে ৮ উইকেটই তার ক্যারিয়ার সেরা।
দুর্দান্ত ফ্লাইট, টার্নের প্রদর্শনীতে ৪৪.৪ ওভার বোলিং করেছেন তাইজুল। কয়েকটি রেকর্ডও বগলদাবা করেছেন। অগ্রজ সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ রফিককে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠেছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বাধিক উইকেট এখন তাইজুলের (১৯)। রফিকের ১৭ উইকেটকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

একই দলের বিরুদ্ধে ইনিংসে সেরা বোলিংটা ছিল সাকিবের। ২০১১ সালে ঢাকায় ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। রবিবার ৭ উইকেট নিয়ে তাইজুলই শীর্ষে আসলেন। ক্যারিয়ারে ৯ম বার ৫ উইকেট পেলেন তিনি। একই সঙ্গে তিন ফরম্যাটে ১৫০ উইকেটের মাইলফলকও পার করেছেন এ বাঁহাতি স্পিনার।
চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের শুরুটাও ছিল তাইজুলময়। দিনের পঞ্চম বলেই ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। ঠিক পরের বলেই আজহার আলীকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান। হ্যাটট্রিক না হলেও পরপর দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি ফেরান এ বাঁহাতি। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। দলের প্রয়োজনে টানা বোলিং করে গেছেন। একে একে শিকার তালিকায় যুক্ত করেছেন ফাওয়াদ আলম, আবিদ আলী, হাসান আলী, নোমান আলী ও ফাহিম আশরাফের নাম।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফ্লাইট, টার্ন, বাউন্সে ব্যাটসম্যানকে ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে বাধ্য করেছেন তাইজুল। তাতেই দিক হারিয়ে বসে পাকিস্তানের চার ব্যাটসম্যান এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে গিয়েছেন।

লাঞ্চের আগেই ফাওয়াদ আলম লিটনের ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল। লাঞ্চের পর সেঞ্চুরিয়ান আবিদ আলীকে থামান তিনি। এলবির ফাঁদে পড়ার আগে আবিদ আলী ১৩৩ রান করেছেন। তাকে তেড়েফুড়ে খেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়া হাসান আলী স্ট্যাম্পড হয়েছেন একটি ছক্কা ও একটি চার মেরে। নোমানকে আউট করার পর চা বিরতির আগে ফাহিম আশরাফকে লিটনের ক্যাচ বানিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের লেজটা গুটিয়ে দিয়েছেনই তাইজুল।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফিরিয়েছেন ২৯ বছর বয়সি এ স্পিনার। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসের বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ে তাইজুলের বোলিংটা ম্লান হতে চলেছে।

Pin It