গোটা বিশ্বে এখন অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সংখ্যা প্রায় আড়াইশ’ কোটি। শত শত নির্মাতার তৈরি অসংখ্য মডেলের এই ফোনগুলোর যে কয়টি সাধারণ সমস্যার কথা প্রায়ই শোনা যায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফোন হ্যাং করা বা ফোন রেসপন্স না করা। বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য বিষয়ে পরামর্শদাতা সাইট টেক কমান্ডো জানাচ্ছে এই সমস্যার কোন কোন সমাধান আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
০১. আপডেট, আপডেট, আপডেট!
অ্যান্ড্রয়েড ফোন নিয়ে সমস্যা এড়াতে হলে সবার আগে যেটি করা দরকার সেটি হচ্ছে সর্বশেষ সংস্করণের অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করে রাখা। এই আপডেট ইনস্টল করার ফলে নিত্যনতুন বিভিন্ন ফিচার আপনি যেমন পাবেন তেমনি বিভিন্ন সিকিউরিটি আপডেট পেতে থাকবেন। গুগল দাবি করছে, প্রতিটি আপডেটের সঙ্গে তাদের অপারেটিং সিস্টেম আরো সুসংহত হয়। ফলে, নানান রকম নিরাপত্তা দুর্বলতা এড়ানো সম্ভব হয়।
আপডেটেড থাকার ফলে বাড়তি যে সুবিধা পাবেন সেটি হচ্ছে, আপনার ফোন নিয়মিত হ্যাং হয়ে যাওয়া বা কোনো কারণে কোনো অ্যাপ্লিকেশন রেসপন্স না করার মতো সমস্যাগুলো কমে আসবে।
আপনার অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করার জন্য সেটিংস → অ্যাডভান্সড → সিকিউরিটি আপডেট অপশনে গিয়ে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমটি আপডেট করে নিতে পারবেন।
০২. ফোনের স্টোরেজ
আপনার অপারেটিং সিস্টেম আপডেটেড আছে কিন্তু তারপরও যদি আপনার ফোন বারবার ক্র্যাশ করে বা হ্যাং করে তাহলে দ্বিতীয় পর্যায়ে যাচাই করে দেখুন ফোনে প্রয়োজনীয় জায়গা আছে কি না। ফোনের স্টোরেজ শতকরা ৯০ ভাগের বেশি পূর্ণ হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে, এবং এর ফলে ফোন হ্যাং করতে পারে।
এটি সমাধান করার জন্য আপনার ফোন থেকে অপ্রয়োজনীয় ফাইল এবং অ্যাপ্লিকেশন মুছে ফেলতে পারেন। ফোনের স্টোরেজ স্পেস বাড়াতে হলে আপনি সেটিংস → স্টোরেজ অপশনে ক্লিক করুন।
এখানে আপনি দেখে নিতে পারবেন কোন ধরনের কনটেন্ট আপনার ফোনে কতটা জায়গা দখল করে আছে। আপনার যে যে অ্যাপ্লিকেশন প্রয়োজন নেই সেগুলো এখান থেকে ডিলিট করে দিতে পারবেন। এর পাশাপাশি ছবি, ভিডিও, অডিও এবং ডাউনলোড করা বিভিন্ন ফাইলও কতোটা কমানো প্রয়োজন সে সিদ্ধান্ত এখান থেকে আপনি নিতে পারবেন।
০৩. অব্যবহৃত অ্যাপ
তৃতীয় পর্যায়ে আপনি বন্ধ করে দিতে পারেন সেই সমস্ত অ্যাপ যেগুলো আপনি ব্যবহার করছেন না, কিন্তু আপনার ফোনে চালু হয়ে আছে। এই কাজটি সচেতনদের অনেকেই অভ্যাসবশত নিয়মিত করেন।
০৪. বাড়তি ব্যাটারি কেইস
অনেক সময়ই ফোনের অটো রিস্টার্ট অপশন বেশ কিছু সাধারণ ঝামেলা থেকে মুক্তি দেয়। এই অপশনটি অন করে রাখলে ছোটখাটো কোনো ঝামেলায় যদি ফোন রিস্টার্ট করালেই সমাধান হয় তবে ফোন নিজেই সেটি করে নেয়।
ফোনের অটো রিস্টার্ট অপশন অন করার জন্য সেটিংস থেকে ডিভাইস অপশনে যাবেন সেখান থেকে অটো রিস্টার্ট অপশনটি অন করে রাখবেন।
০৬. মানহীন অ্যাপ
মানসম্মত নয় এমন অনেক অ্যাপ্লিকেশনও আপনার ফোন হ্যাং করার কারণ হতে পারে। প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা অ্যাপ্লিকেশন কে গুগল সবসময় নিরাপদ হিসেবেই দাবি করে। তারপরও অনেক অ্যাপেই নানা রকম ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে এর ফলে এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ফোনের অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে ঝামেলা করে। কোনো অ্যাপ আপনার ফোনের সঙ্গে ঝামেলা করছে কিনা সেটা যাচাই করার জন্য সেফ মোডে ফোন অন করাটা অনেক সময়ই বুদ্ধিমানের কাজ।
সেফ মোডে ফোন অন করতে হলে প্রথমে ফোনটিকে একেবারেই শাটডাউন করে দিতে হবে। এরপর ফোন অন করার সময় বিশেষ একটি বাটন চেপে ধরার মাধ্যমে আপনি সেইফ মোডে যেতে পারবেন। স্যামসাং ফোনের ক্ষেত্রে ভলিউম ডাউন কি আপনি যদি চেপে থাকেন তাহলে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের লোগো পর্দায় আসার পর সেইফ মোড দেখাবে। বিভিন্ন ফোনের ক্ষেত্রে এই বাটন ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
সেইফ মোডে ফোন চালু করার পর যদি বারবার হ্যাং করে যাওয়া অথবা ক্রাশ করার মতো সমস্যা আর দেখা না যায়, আপনি ধরে নিতে পারেন কোনো বিশেষ অ্যাপ এর কারণে আপনার এই ঝামেলা হচ্ছিল।
০৭. ফ্যাক্টরি রিসেট
সর্বশেষ উপায় হচ্ছে ফোনটিকে ফ্যাক্টরি সেটিংস এ নিয়ে যাওয়া। কোনভাবেই যদি আপনার ফোনের এই সমস্যা থেকে মুক্তি না পান তাহলে সর্বশেষ উপায় হিসেবে আপনি ফোনটিকে ফ্যাক্টরি সেটিংসে নিয়ে যেতে পারেন। এর ফলে আপনার ফোনের সকল ফিচার, সকল অ্যাপ্লিকেশন হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, কিন্তু এর ফলে আপনি আপনার ফোনটিকে একেবারে নতুন কেনা ফোনের মতো নতুন করে সেটআপ করে নিতে পারবেন।
ফ্যাক্টরি রিসেট করতে হলে আপনাকে প্রথমে সেটিংস-এ যেতে হবে। সেখান থেকে ফ্যাক্টরি ডেটা রিসেট অপশনে ক্লিক করুন ও নির্দেশনা অনুসরণ করুন।