প্রকাশিত হল গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ এর শেষ দুই খণ্ড

graphic-novel-mujib-150222-10

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হল গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ এর নবম ও দশম খণ্ড, যার মাধ্যমে শেষ হল এ ধারাবাহিক প্রকাশনার।

নবম খণ্ডে আওয়ামী লীগ গঠনের বিভিন্ন ধাপ, পাকিস্তানের পাঞ্জাবে গিয়ে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাক্ষাৎ এবং সেখানকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তার পরিচয়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এই খণ্ডের নাম রাখা হয়েছে ‘মিশন পাঞ্জাব’।

আর দশম খণ্ডের শিরোনাম ‘মুক্তির পাথে’। এই খণ্ডে কারাগারে থাকা শেখ মুজিবের অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়া, সেখানে গোপনে ভাষা আন্দোলনের জন্য সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন, জেলে অনশন, শরীর ভেঙে পড়া, ঢাকার বাইরে স্থানান্তর, জেল থেকে মুক্তি, প্রাদেশিক নির্বাচনে বিজয় এবং ছয় দফাসহ বিভিন্ন ঘটনা স্থান পেয়েছে।

পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর লাহোরে পৌঁছানো, ফেরার সময় দিল্লি, কলকাতা হয়ে বেনাপোল দিয়ে খুলনা, ছদ্মবেশে থেকে জাহাজ চড়ে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর ঘটনা এই খণ্ডে এসেছে।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রকাশের পর শিশু-কিশোর ও তরুণদের কাছে তার ঘটনাবহুল জীবন নতুন রূপে তুলে ধরার জন্য বইটিকে গ্রাফিক নভেলের রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে প্রতিটি খসড়া দেখে দেওয়ায় অনেক কাজ সহজ হয়েছে এবং অনেক ভুলও এড়ানো গেছে বলেন জানিয়েছেন গ্রাফিক নভেল মুজিবের সম্পাদক শিবু কুমার শীল।

মঙ্গলবার শুরু হওয়া একুশে বইমেলোয় শেষ দুটি খণ্ড পাওয়া যাচ্ছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তিনি।

শিবু বলেন, “আগামী ১৯ তারিখ শেষ দুই খণ্ডের আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা উৎসব হবে। সিআরআইয়ের স্টলের পাশে হবে সেই অনুষ্ঠান।”
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রাফিক নভেল হলেও বাংলাদেশে এটাই ছিল এ ধরনের প্রথম উদ্যোগ। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ গ্রাফিক নভেল মুজিবের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) উদ্যোগে এর বিভিন্ন পর্ব প্রকাশিত হয়েছে।

প্রকাশক হিসেবে রয়েছেন সিআরআইয়ের ট্রাস্টি ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং আরেক ট্রাস্টি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে তার বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে।

এছাড়া আছে বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বংসহা সহধর্মিনীর কথা, যিনি তার রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে পাশে ছিলেন অবিচল।

বইমেলায় এই প্রকাশনার ওপর বিভিন্ন ছাড় থাকবে বলেও জানান শিবু। শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে সবকটি খণ্ড কিনলে ৪০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।

এই গ্রাফিক নভেল নিয়ে ভবিষ্যতে আরও পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত তিনটা খণ্ড ইংরেজিতে এবং জাপানি ভাষায় দুটি খণ্ড অনূদিত হয়েছে। ভবিষ্যতে ফরাসি ও চায়নিজ ভাষায় অনুবাদ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”

Pin It