সন্ত্রাস ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে র্যাবের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের এই বিশেষ বাহিনীর উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
রোববার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে তাকে এই আহ্বান জানান তিনি।
পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের বৈঠকের বিষয়বস্তু উল্লেখ করে বলা হয়, এ সময় র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উঠান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
সন্ত্রাস ও গুরুতর অপরাধ মোকাবেলায় র্যাব গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং সংস্থাটিকে এফবিআইয়ের সাথে তুলনা করা হত।
“এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে বাংলাদেশের সফলতার অবদান অনেকাংশে র্যাবের।”
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র ‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমদসহ বাহিনীর সাত কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
মোমেনের আহ্বানের জবাবে মার্কিন কর্মকর্তা ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড কী বক্তব্য দিয়েছেন, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।
এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দুদেশের মধ্যে অংশীদারত্ব সংলাপেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
তবে সংলাপ শেষে নুল্যান্ড বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ’জটিল ও কঠিন’। তবে, এ বিষয়ে উভয় দেশ আলোচনা চালাচ্ছে এবং চালাবে।
“আপনারা জানেন, র্যাবের অতীতের কার্যক্রম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আমরা বলতে পারি, গত তিন মাসে এসব বিষয় প্রতিকারের ক্ষেত্রে আমরা উন্নতি লক্ষ্য করেছি।”
ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে র্যাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো প্রতিকারে নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন দ্বিপক্ষীয় সংলাপে যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
নুল্যান্ডের সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, যখনই কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ উঠেছে, তখনই যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিষ্ঠান হিসাবে র্যাবের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটনার কথা তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মোমেন। এর মাধ্যমে দেশের ’উগ্রবাদীরা উৎসাহিত’ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ’খারাপ’ হওয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা তৈরির আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন তিনি।
এ সময় মার্কিন কোম্পানিগুলোকে আরও বেশি পরিমাণে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান মোমেন। এর মাধ্যমে উভয় দেশ সমভাবে লাভবান হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শ্রম বিষয়ে সম্পৃক্ত হতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কথা মোমেনের কাছে তুলে ধরেন আন্ডার সেক্রেটারি নুল্যান্ড।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের মতো বাংলাদেশকে সহায়তার প্রস্তাব দেন তিনি।