প্রথম ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ খোঁজ মিলেছিল নব্বই দশকের শুরুতেই। এবার সব মিলিয়ে পাঁচ হাজার ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ সন্ধান পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
আমাদের সূর্যকে ঘিরে আবর্তন করা গোলকগুলোকে আমরা বলি গ্রহ বা প্ল্যানেট। সৌরজগতের বাইরে অন্য কোনো নক্ষত্রকে আবর্তন করা বস্তুকেই বলা হয় এক্সোপ্ল্যানেট।
মহাকাশ গবেষণায় এই নতুন মাইলফলকের ঘোষণা দিয়েছে নাসার ‘জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল)’। সোমবারের ঘোষণায় এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ সন্ধান পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে গবেষণাগারটি।
নাসার ‘এক্সোপ্ল্যানেট আর্কাইভ’-এ সৌরজগতের বাইরের নতুন ৬৫টি গ্রহ যোগ হয়েছে। এতে গবেষণা সংস্থাটিতে উৎসবের আমেজ এসেছে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট।
“এটা শুধু সংখ্যা নয়, এদের প্রত্যেকটিই নতুন পৃথিবী, নতুন গ্রহ। আমি এদের প্রতিটির জন্য উচ্ছসিত কারণ আমরা এদের সম্পর্কে কিছুই জানি না।”– এক বিবৃতিতে বলেছেন ‘এক্সোপ্ল্যানেট আর্কাইভ’ প্রধান জেসি ক্রিশ্চিয়ানসেন।
প্রথম ‘এক্সোপ্ল্যানেট’-এর সন্ধান মিলেছিল নব্বই দশকের শুরুতে। অর্থাৎ, নতুন নতুন ‘এক্সোপ্ল্যানেট’-এর সন্ধান মিলছে বেশ দ্রুতগতিতেই। নাসা আর্কাইভে চার হাজার ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ যোগ করার ঘোষণা দিয়েছিল ২০১৯ সালের জুন মাসে। তিন বছরেরও কম সময়ে আরও এক হাজার গ্রহ যোগ হলো আর্কাইভটিতে।
বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ‘কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ’ এবং হালের ‘ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট’ (TESS) এর সাহায্যে গবেষকদের পরিশ্রম ও ডেটা সংগ্রহের কারণে দূরের গ্রহগুলো খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে সিনেট।
বিজ্ঞানীরা কেবল খেলার ছলে এসব ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ খোঁজ করছেন না, বরং এদের মধ্যে কোনো গ্রহ বাসযোগ্য কি না সেটিও নির্ধারণের চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি চালু হওয়া ‘জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ’-এর সাহায্যে ‘এক্সোপ্ল্যানেট’ এবং গ্রহগুলোর বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সাইটটি।
“আমার ধারণা, এটা অবশ্যম্ভাবী, আমরা হয়ত কোথাও কোনো আদি জীবন খুঁজে পাব।”– বলেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানি আলেকজান্ডার ওলসজান। তিন দশক আগে প্রথম এক্সোপ্লানেট আবিষ্কারের গবেষণা প্রতিবেদনটির মূল লেখক ছিলেন তিনি।
এখনো হুবহু পৃথিবীর মতো গ্রহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, পৃথিবীর সৌরজগতের বাইরে অন্য ভিন্ন ভিন্ন সৌরজগতগুলোতেও খোঁজ মিলছে এক্সেপ্লানেটের । পাঁচ হাজার সংখ্যায় বড় মনে হলেও পুরো ছায়াপথের সঙ্গে তুলনা করলে একে তুচ্ছই বলা চলে।
“আমরা অন্তত এটা জানি যে, আমাদের ছায়াপথে এমন শত কোটিরও বেশি গ্রহ রয়েছে।”–বলেছে নাসা।