অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পাশাপাশি বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাব দেশের সাধারণ মানুষের ওপর ন্যূনতম পর্যায়ে রাখতে সারকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন,‘ আমরা সর্বোচ্চ চেস্টা করছি-দেশের মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় কিংবা এর প্রভাব ন্যূনতম পর্যায়ে থাকে।’
বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক বিষয়ক ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, সারাবিশ্ব এখন উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের কাজ হলো প্রয়োজনীয় রাজস্ব নীতি গ্রহণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং চলমান প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা। তিনি বলেন, ‘আমরা দু’টি লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করছি।’
বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সরকারের এই জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী আরও বলেন, গত ৪০ বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। যুক্তরাজ্যেও সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে।এর পাশাপাশি ভারত, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামেও মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি খারাব।
এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে মার্কিন ডলারের সংকট রয়েছে সেটি অস্বীকার করছি না। কিন্তু পরিস্থিতি ততটা খারাপ নয়। তিনি বলেন,‘বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে মজুদ রয়েছে সেটি আমাদের জন্য পর্যাপ্ত এবং আমরা প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় যথেষ্ট ভাল আছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, এ ধরনের ডলার সংকট আগেও হয়েছে। ২০০১ সালে এই সংকট দেখা দিয়েছিল। তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রিয় ব্যাংক বিলাসী পণ্যের ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন বাড়াতে পারে এবং সরকার রেগুলেটরি শুল্ক আরোপ করতে পারে।
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার নিজেও বুঝে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ালে সেটার প্রভাব অব্যশই পড়বে। তিনি বলেন,‘ আমরা চাই গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাবটা যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে। সেজন্য ভর্তুকি দিয়ে জনগনকে সহায়তা করা হয়।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সকল স্টেকহোল্ডারদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে।
এবারের বাজেটে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কল্যাণের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এতে তারা উপকৃত হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, বছরের পর বছর ধরে দীর্ঘদিন নানা চ্যানেলে দেশের বাইরে যেসব টাকা চলে গেছে, সেসব টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উৎসাহ দিতে এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু উদ্যোগ নিয়েছে এবং আরও পদক্ষেপ নেবে। বাজেটের আগেই সেটা ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কিছু উদ্যোগ নিচ্ছে। তার প্রতিফলন বাজেটে ঘটবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ বিদেশে চলে যাওয়া অর্থ দেশে ফেরাতে এ ধরনের সুযোগ দিয়েছে এবং ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। ইন্দোনেশিয়া এ সুযোগ দেওয়ায় অনেক টাকা ফেরত এসেছে। আমি মনে করি, সুযোগটি অত্যন্ত ভালো এবং সবাই গ্রহণ করবে।’