লালমাটিয়ায় ২৮৮ পরিবারকে উচ্ছেদ

image-618716-1669241525

রাজধানীর লালমাটিয়ায় অভিযান চালিয়ে ২৮৮টি পরিবারকে বুধবার উচ্ছেদ করেছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ (এনএইচএ)। এ সময় ৮টি ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরিবারগুলো প্রায় ৬০ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছিল।

আদালতের রিট মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই উচ্ছেদ করায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের মধ্যে অনেকের ছেলেমেয়ের পরীক্ষা চলছিল। এ অবস্থায় উচ্ছেদ হতে হবে-এমন ধারণাও ছিল না তাদের। উচ্ছেদ হওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

জানা যায়, লালমাটিয়ার কাজী নজরুল ইসলাম সড়কের প্রায় চার বিঘা জায়গার ওপর এনএইচএ’র পুরোনো তিন তলাবিশিষ্ট ৮টি ভবন ছিল। সেখানে ২৮৮টি পরিবার বসবাস করত।

এসব পরিবার ভাড়া দিয়ে দীর্ঘদিন বসবাস করলেও তাদের ওই ভবনের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এছাড়া ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে নতুন ভবন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছিল এনএইচএ।

এটি নিয়ে দুপক্ষের মামলা চলেছে। উচ্চ আদালতে সে মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে ২০২১ সালে। সম্প্রতি নতুন করে উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।

এর শুনানি ছিল আজ। জানা যায়, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো এনএইচএ’র ভবনগুলোয় প্রায় ৬০ বছর ধরে বসবাস করছিল। এখন সেখানে নতুন করে বহুতল ভবন করা হবে।

তবে ওইসব ভবনে ক্ষতিগ্রস্ত ২৮৮টি পরিবারকে বরাদ্দ দেওয়া হবে না। মোহাম্মদপুরের অন্য একটি প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রতি বর্গফুট ৬ হাজার টাকা করে পরিশোধ করে তাদের ফ্ল্যাট কিনতে হবে।

যদিও বেশিরভাগ ভাড়াটিয়ার ওইসব ফ্ল্যাট নেওয়ার সক্ষমতা নেই। এসব নিয়ে পরিবারগুলোর সঙ্গে এনএইচএ’র মতপার্থক্য চলছিল। এ অবস্থায় এনএইচএ জোরপূর্বকভাবে ওইসব ভবনে বসবাসকারীদের বের করে দিল।

লালমাটিয়া ডি-টাইপ কলোনির বাসিন্দা মো. ফয়সাল বলেন, এনএইচএ অমানবিক কাজ করেছে। ৬০ বছর ধরে বসবাসকারীদের টেনেহিঁচড়ে ভবন থেকে বের করে দিয়েছে। আবাসনের সমাধান না করেই তারা আমাদের বের করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, সৃষ্ট সমস্যা নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা করা হয়েছিল। যার শুনানি হওয়ার কথা আগামীকাল (আজ)। কিন্তু সেসব আমলে না নিয়েই তারা আমাদের বের করে দিয়েছে।

এমন অনেককে বের করে দেওয়া হয়েছে, যাদের ঢাকায় থাকার আর কোনো বিকল্প নেই। তারা আমাদের কোনো নোটিশও করেনি। একটি সরকারি সংস্থার পক্ষে এমন কাজ করা কীভাবে সম্ভব?

এসব বিষয়ে এনএইচএ’র চেয়ারম্যান একেএম শামীমুল হক বলেন, লালমাটিয়া ডি-টাইপ কোয়ার্টার বলে পরিচিত ৮টি ভবন পরিত্যক্ত হিসাবে চিহ্নিত।

সেখানে সাইনবোর্ডও টাঙানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানকার বসবাসকারীরা সেটা খুলে ফেলেন। তাদের সঙ্গে এনএইচএ’র একটি মামলা চলছিল, সেটা ২০২১ সালে শেষ হয়েছে।

উচ্চ আদালত ৬ মাসের সময় দিতে বলেছিলেন। সেটাও পার হয়েছে। নতুন করে তাদের প্রত্যেককে নোটিশ করা হয়েছে। আর উচ্ছেদের কয়েকদিন আগ থেকে সেখানে মাইকিংও করা হয়েছে।

Pin It