জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, বীর শহিদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক পরিবেশ পায়নি, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ পায়নি, সুশাসন পায়নি, সম্পদের সুষম বণ্টন হয়নি। মানুষের স্বাধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জিত হয়নি। সব কিছুই দলীয়করণ করা হয়েছে। বায়ান্ন বছরেও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ পায়নি মানুষ। নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা এখনো একমত হতে পারিনি।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলব- একসঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে আসা জরুরি।
তিনি বলেন, পাঁচ কোটি মানুষ বেকার। বেকারদের আমরা কাজে লাগাতে পারছি না। কর্মবিমুখ শিক্ষা ব্যবস্থায় সার্টিফিকেট নিয়ে বসে আছে যুবসমাজ, তাদের জন্য কাজ নেই। আমরা একটি কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চাই। আমরা অনেক বড় বড় প্রকল্প করি, কিন্তু হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেই। হাসপাতালে সিট নেই, তাই বাথরুমের সামনে, বারান্দায় মানুষ শুয়ে থাকে। অথচ প্রতিটি উপজেলায় একটি করে বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ করা জরুরি। ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারে, সেজন্য কিছু কিছু বিষয়ে ঐকমত্য প্রয়োজন। বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা বিকেন্দ্রিকরণ বিষয়ে ঐকমত্য হলেই আগামী প্রজন্ম স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারবে।
বুধবার সকালে মিরপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতীয় পার্টির পক্ষে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা হস্তান্তরের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে মানুষের সব অধিকার হরণ করেছে। তারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট করেছে। সে কারণেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে দেশের মানুষ আর চায় না। মানুষ এখন তৃতীয় একটি শক্তিকে চায়। দেশের মানুষ মনে করে জাতীয় পার্টি দেশের মানুষকে সুশাসন দিতে পারবে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। তখন বিএনপি বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আবার ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তখন আওয়ামী লীগ বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোট বিজয়ী হলে বিএনপি বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আসলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার প্রমাণ করেছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না। আমরা চাই, নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে আনুপাতিক হারে নির্বাচন হোক। আনুপাতিক হারে নির্বাচন হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
এর আগে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় মহিলা পার্টির উদ্যোগে এক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও জাতীয় মহিলা পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপির পক্ষে জাতীয় মহিলা পার্টির র্যালিতে নেতৃত্ব দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আক্তার এমপি এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হেনা খান পন্নী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মহিলা পার্টি ঢাকা উত্তরের সভানেত্রী সেলিমা খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেত্রীরা।
র্যালিতে আরও অংশ নেন- জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর, জাতীয় তরুণ পার্টি, জাতীয় যুব সংহতি, জাতীয় পেশাজীবী সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটি, জাতীয় ছাত্রসমাজ এবং জাতীয় কৃষক পার্টি ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সেন্টু ও ভাইস চেয়ারম্যান ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম পাঠানের নেতৃত্বে স্মৃতিসৌধে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আখতার এমপি, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরীফা কাদের এমপি, উপদেষ্টা এমএ কুদ্দুস খান, আমানত হোসেন আমানত, হেনা খান পন্নী, জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচএম শাহারিয়ার আসিফ, ভাইস-চেয়ারম্যান শেখ আলমগীর হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব শামসুল হক, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, শ্রমিক পার্টির সভাপতি একেএম আশরাফুজ্জামান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন সরকার, মো. সাইফুল ইসলাম, কৃষক পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান, যুব সংহতির সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তফা, ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা পার্টির সভাপতি ডা. সেলিমা খান, জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আহমেদ, তরুণ পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন মৃধা, যুব বিষয়ক সম্পাদক দ্বীন ইসলাম শেখ, মুক্তিযোদ্ধা পার্টির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোতালেব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, গোলাম কাদির, মোটর শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান শিপন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, হকার্স পার্টির সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু, জাতীয় ছাত্রসমাজের সভাপতি মো. আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খান, ওলামা পার্টির সহ-সভাপতি ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুস, পেশাজীবী পার্টির সদস্য সচিব বাহারুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুব সংহতির আহবায়ক শেখ সারোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি মহানগর উত্তরের সভাপতি নাসির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া ও ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন থানার নেতাদের মধ্যে আলমাস উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম সেলিম, এসএম হাশেম, আমিনুল ইসলাম সেলিম, ড. নাসির উদ্দিন কবুল, মো. আলমগীর হোসেন, আব্দুস সাত্তার, আবুল বাশার, শাখাওয়াত হোসেন, রিয়াজ আহমেদ, মোহাম্মদ আলী, রেজাউল করিম প্রমুখ।