নবিজির দাম্পত্য জীবন

July 21, 2023

image-698249-1689920007

সব জাহানের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)। সব শ্রেষ্ঠত্বের সঙ্গে তিনি শ্রেষ্ঠতম স্বামীও ছিলেন।

তাঁর চেয়ে অধিক সুন্দর আচরণের অধিকারী পৃথিবীতে আসেননি, আর কেউ আসবেনও না। সুখময় ও শান্তিপূর্ণ এবং কলহমুক্ত দাম্পত্য জীবন পেতে রাসূল (সা.)-এর অনবদ্য দাম্পত্য জীবনের বিভিন্ন দিক হাদিসের নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুযায়ী জীবন পরিচালনার বিকল্প নেই।

স্ত্রীদের সঙ্গে রাসূল (সা.)-এর আচরণ-উচ্চারণ একটি আদর্শ দাম্পত্য জীবনের সর্বোত্তম উপমা। তাঁর মোবারক জীবনীতে স্ত্রীদের সঙ্গে আন্তরিকতাপূর্ণ ও প্রেমময় সব চিত্র দেদীপ্যমান। রাসূল-পরবর্তী সময়ে তাঁর সম্মানিত স্ত্রীরা আবেগ-উচ্ছ্বাসের সঙ্গে তা বর্ণনা করেছেন। হাদিসের গ্রন্থগুলোতে এসবের বিশদ বর্ণনা রয়েছে।

এক হাদিসে আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) কখনো কখনো ভালোবেসে আমাকে হুমায়রা বা লাল গোলাপ বলে ডাকতেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪৭৪)।

মহানবি (সা.) তাঁর আচার-আচরণে স্ত্রীদের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করতেন। তাদের সঙ্গে নানা ধরনের খুনসুটি করতেন। এতে পারস্পরিক আন্তরিকতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও রাসূল (সা.) একই পাত্র থেকে গোসল করতাম যা আমাদের মধ্যে থাকত। তিনি আমার চেয়ে অগ্রগামী হলে (দ্রুত গোসল করে পানি নিলে) আমি বলতাম, আমার জন্য রাখুন! আমার জন্য রাখুন! (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩২১)।

অনেকেই সরাসরি কিংবা মুখে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে লজ্জাবোধ করেন। তবে আচরণ ও কাজে প্রকাশ করে থাকেন। অথচ উচ্চারণ ও কথার মাধ্যমে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করা মহানবি (সা.)-এর সুন্নত।

আল্লাহর রাসূল (সা.) বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন রোমাঞ্চকর কথা বলতেন। মিষ্টি কথায় তাদের মুগ্ধ করতেন। হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) প্রিয়তমা খাদিজা (রা.) সম্পর্কে বলেছেন, আমার মনে তার প্রতি ভালোবাসা ঢেলে দেওয়া হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস : ২৪৩৫)। আয়েশা (রা.)-এর প্রশংসা করে রাসূল (সা.) বলেছেন, খাবারের মধ্যে সারিদ যেমন সবার সেরা; নারীদের মধ্যে আয়েশা সবার সেরা। (বুখারি, হাদিস : ৩৪১১)।

স্বামীর যে কোনো কাজেই স্ত্রীর মতামত নেওয়া উচিত। ব্যবসা-বাণিজ্য এমনকি ব্যক্তিগত কাজেও সঙ্গিনীর মতামত নেওয়া একটি সুন্দর ব্যাপার। রাসূলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন বিষয়ে স্ত্রীদের মতামত গ্রহণ করতেন এবং তার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতেন। ঘরের কাজকর্মে স্ত্রীদের সহযোগিতা করার প্রতি পুরুষদের অনাগ্রহ লক্ষ করা যায়। অনেকে আবার এটাকে মানহানিকর মনে করে থাকে। ছোট ছোট বিষয়েও তারা স্ত্রীনির্ভর হয়ে থাকে। অথচ রাসূল (সা.) ঘরের কাজকর্মে স্ত্রীদের সহযোগিতা করতেন।

সাদ আমির

লেখক : শিক্ষার্থী : জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম নতুনবাগ, রামপুরা, ঢাকা।


Powered By vQsolution