মুমিনুল হক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন তখনও। তার গলার স্বর নিচু, এরপরও কথা বলছিলেন খুব হেয়ালি ভঙ্গিতে।
কাইল জেমিসন খেয়ালই করেননি সেটি। রুমে ঢুকেই হুড়মুড়িয়ে গেলেন কথা বলার ডায়াসের দিকে। পরে অবশ্য মুমিনুলকে খেয়াল করে পেছনে গিয়ে দাঁড়ালেন তিনি।
মাঠের বাইরের মতো মুমিনুল হকের সঙ্গে জেমিসনের সাক্ষাৎ হয়েছিল পিচেও। দুজনের উচ্চতায় তফাৎটা অনেক বেশি। একজন ছয় ফুট ছাড়িয়ে আরেকজন পাঁচের চেয়ে একটু বেশি। ওই সুবিধা কাজে লাগিয়ে জেমিসনকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মুমিনুল।
ওই উইকেটে বদলে যায় ম্যাচের মোড়। সাউদির সঙ্গে জেমিসনের ৫২ রানের জুটি ভাঙে, নিউজিল্যান্ডেরও লিডটা বেশি বড় হয়নি। বাংলাদেশই এখন দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৫ রানে এগিয়ে। সামনে এখনও দুদিন, বাংলাদেশের হাতে সাত উইকেট; এই রানটা কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে?
দিনের শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা মুমিনুল বলেছেন, ‘এটা বলাটা খুব কঠিন। আমার কাছে এখনও মনে হচ্ছে উইকেট ভালো। কত রান নিরাপদ এটা বলা অনেক কঠিন। ৪০০-ও হতে পারে, ৩৫০-ও হতে পারে। কালকের ওপর নির্ভর করে। কাল চতুর্থ দিন, অন্যরকম আচরণ করতে পারে। চারশ হলে ঠিক আছে। ’
তার কাছে এ নিয়ে প্রশ্ন আসে এরপরও। ম্যাচের এখনও দুদিন বাকি। বাংলাদেশের হাতে সময়ের সঙ্গে উইকেটও আছে। ফলও আসার কথা এ ম্যাচে। প্রশ্ন শেষ করার আগেই মুমিনুল বলেন, ‘রেজাল্ট হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ। ’
এরপর নিজেদের কেমন পরিকল্পনা হবে তা নিয়ে মুমিনুল জানান, ‘স্বাভাবিক ক্রিকেট খেললেই ভালো। যত পারা যায় ওদের দিক থেকে খেলা নিয়ে আসতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটটাই এমন। ধৈর্য ধরে বল করতে হবে। স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে হবে। ’
২৬ রানে দুই উইকেট হারানোর পর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী হয়ে দলকে খুব ভালোভাবে এগিয়ে নিচ্ছিলেন মুমিনুল। কিন্তু দুজনের ৯০ রানের জুটি ভাঙে রান আউটে। মিড অফে বল ফেলে রান নিতে দৌড় শুরু করেন মুমিনুল, কিন্তু তখনও বলের দিকে তাকিয়ে ছিলেন শান্ত। মুমিনুল মাঝপথ থেকে ফেরার আগেই স্টাম্প ভেঙে যায়।
ওই রান আউট পোড়াচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে মুমিনুল বলেন, ‘না ভোগাচ্ছে না ভাই। ক্রিকেটে এটা হতেই থাকে, হবে, স্বাভাবিক। যতটুকু হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আপনারাও জানেন, আমি এসব নিয়ে মন খারাপ করি না। দলের জন্য যতটুকু অবদান রাখা যায়, এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ’
প্রথম ইনিংসে ২৬৬ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর ৭ রানের লিড পায় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের জন্য রান করা আরও কঠিনই হওয়ার কথা। কেমন লক্ষ্য আদর্শ হয় কিউইদের জন্য? এই প্রশ্ন করা হয়েছিল ডানহাতি পেসার জেমিসনের কাছে।
উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যাটারদের কাছে প্রশ্ন হতে পারে। এই মুহূর্তে আমার কোনো ধারণা নেই। আমি এটাও নিশ্চিত না তারা কোথায় আছে। আমরা আগামীকালকে সকালে কিছু উইকেট নিতে চাই। যেন ব্যাটারদের জন্য অল্প লক্ষ্য থাকে। ’