জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্লাটিনামজয়ন্তী। সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডে উপস্থাপন করা হবে দলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা ও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা আনন্দ-উৎসব করবেন। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। ধারাবাহিক বৈঠকও করছেন তারা। ক্ষমতাসীনরা বলছেন, উপমহাদেশে প্রচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এই দলের প্লাটিনামজয়ন্তীকে স্মরণীয় করতে সব ধরনের প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হচ্ছে। আমন্ত্রণ জানানো হবে দেশের নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সুশীলসমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যন্ত প্লাটিনামজয়ন্তী জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হবে। এতে দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। কে পক্ষ, কে প্রতিপক্ষ-সেটা বিবেচনার বিষয় নয়। তবে নগরের বিভিন্ন স্থানে সাজসজ্জা আমরা করব না। এই কঠিন সময়ে আমাদের নেত্রী সাজসজ্জা বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগের প্লাটিনামজয়ন্তী জাঁকজমকপূর্ণ করতে সব ধরনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা উৎসব, আমেজ ও আনন্দঘন পরিবেশে দিবসটি পালন করব। প্লাটিনামজয়ন্তীর মাধ্যমে স্বাধীনতাসংগ্রাম থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের ইতিহাস, ঐতিহ্য, আন্দোলন ও সংগ্রাম দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে তুলে ধরা হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, উপমহাদেশের প্রচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এই দলের প্লাটিনামজয়ন্তীতে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। দলের পক্ষ থেকে সেভাবেই কর্মসূচি সাজানো হচ্ছে। ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের ওইদিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে প্রতিষ্ঠা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলটির। এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণীয় করতে প্লাটিনামজয়ন্তী হিসাবে পালন করা হবে। আলোচনাসভা, সেমিনার, চিত্র প্রদর্শনী, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে ভিন্নতা। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড, তোরণ নির্মাণের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হবে দলটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য। স্বাধীনতাসংগ্রাম, গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ উঠে আসবে দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের গল্প। ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যন্ত দলীয় প্রচার-প্রচারণায় গুরুত্ব পাবে পদ্মা সেতু, মেট্রেরেল, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বাস্তবায়ন হওয়া সরকারের বড় বড় মেগা প্রকল্প।
এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতারা। ইতোমধ্যে মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, সিটি করপোরেশনের মেরয়, ঢাকার সংসদ-সদস্য এবং দলের সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করা হচ্ছে। সর্বশেষ সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করা হয়। এর আগে রোববার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্লাটিনামজয়ন্তীর কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যে সব জেলা-উপজেলায় দলের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন যেসব কর্মসূচি থাকবে : ২৩ তারিখে সকালে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে প্লাটিনামজন্মজয়ন্তীর শুভ উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে ধানমন্ডি ৩২ বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত আনন্দ র্যালি করা হবে। বিকাল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। ঢাকা সিটিতে সাইকেল র্যালি, রবীন্দ্র সরোবর ও হাতিরঝিলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়াও সারা দেশে এতিমখানা ও হাসপাতাল এবং কর্মজীবী, গরিব, অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি থাকবে। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে ব্যস্ত স্ব স্ব দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।