“তারা আমাদের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে। আশা করি, এ বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটা সিদ্ধান্ত নেবে,” বলছেন নগর সংস্থার প্রধান নির্বাহী।
চার ব্যাংকে রাখা ২৯ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হলেও ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে থাকায় মুনাফাসহ সেই অর্থ তুলতে পারছে না ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
এ পরিস্থিতিতে নগর সংস্থার তরফে গভর্নরের কাছে চিঠি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
ওই চার ব্যাংক হচ্ছে- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।
জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর খায়রুল আলম বলেন, “ডিপোজিট ম্যাচিউরড হওয়ার পর সেটার জন্য এসব ব্যাংকে আমরা আবেদন করেছি। কিন্তু তারা আমাদের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় চেয়েছে।
“আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি যে- এসব ব্যাংক আমাদের টাকা দিতে পারছে না। তবে এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। আশা করি, এ বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটা সিদ্ধান্ত নেবে।”
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকের সঙ্গে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
চিঠিতে ডিএনসিসি লিখেছে, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পান্থপথ মহিলা শাখা ও উত্তরা শাখায় ৪ কোটি টাকার এফডিআর ছিল।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কুড়িল বিশ্ব রোড শাখায় এফডিআর ছিল ১০ কোটি টাকার। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের প্রগতি সরণি শাখায় এর পরিমাণ ছিল ৫ কোটি টাকা। আর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখায় ১০ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিল ডিএনসিসি।
সংস্থাটি বলছে, স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় মুনাফাসহ টাকা উত্তোলনের জন্য জুলাইয়ের শুরুতে আবেদন করা হয়। তবে কাঙ্ক্ষিত সেই অর্থ পাওয়া যায়নি।
মুনাফাসহ সর্বসাকুল্যে পাওনার পরিমাণ কত তা ডিএনসিসির সিইও মীর খায়রুল আলম জানাতে পারেননি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখার ব্যবস্থাপক জাফরিন খন্দকারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোও ফোন কলে সাড়া দেয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, এসব ব্যাংকে আমানতের বিপরীতে উচ্চ মুনাফার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত। সে কারণে অন্য ব্যাংকে আমানত না রেখে এসব ব্যাংকে আগ্রহী ছিল অনেকেই।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসব ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে শেখ হাসিনার আমলে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসব দুর্বল ব্যাংককে সহায়তার প্রশ্নে সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ না দিয়ে আন্তঃব্যাংক থেকে তারল্য সহযোগিতা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এরপর তারা সবল ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে; এখন পর্যন্ত ৫টি সবল ব্যাংক তারল্য সহায়তা দিয়েছে।





