জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত, প্রতিবন্ধীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নিরাপত্তা চেয়েছেন। এসব নির্বাচনে তাদের প্রতিনিধি রাখার বিষয়েও দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার জাতীয় সংসদের কেবিনেট কক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তারা এসব দাবি জানান।
মতবিনিময় সভায় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান হওয়া দরকার। জাতি ধর্ম নির্বিশেষ আমরা এক পরিবারের সদস্য। এর মধ্যে বিভাজন হওয়া উচিত নয়। সবাই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করলে ও সুশাসন নিশ্চিত হলে আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক অসঙ্গতি আছে। যা আমরা চিহ্নিত করেছি- দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা, উচ্চকক্ষ কীভাবে নির্বাচিত হবে তা নির্ধারণ, ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ, দলভিত্তিক স্থানীয় সরকার নির্বাচন নয়- এ বিষয়টা জোরালোভাবে এসেছে।
বদিউল আলম বলেন, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন দলভিত্তিক নয়, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন সরাসরি আসবে কিনা, সে প্রস্তাবও এসেছে। ভোটার তালিকা নিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায় ও অন্য সম্প্রদায়ের সমস্যা আছে। অতীতে যত অন্যায় ও বৈষম্য হয়েছে- সেসব দূর করার জন্য আমাদের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এমন একটা দেশ গড়তে চাই- যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হবে। যে চেতনা থেকে আন্দোলন হয়েছে সে চেতনার ভিত্তিতে আমরা পরিচালিত হতে চাই।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের নির্বাহী কমিটির সদস্য রিপন চন্দ্র বানাই বলেন, জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারে আদিবাসীদের প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে হবে। সংসদে সংরক্ষিত ৫০টি আসনে নারী, আদিবাসী, দলিত, চা শ্রমিক, কৃষকসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে। আদিবাসী প্রতিনিধি সন্ধ্যা মালো বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনেও পিছিয়ে পড়ারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যে হেরেছে সে নির্যাতন করেছে।
অনগ্রসর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (আসুস) নির্বাহী পরিচালক রাজকুমার শাও বলেন, আদিবাসীদের ভোটার তালিকা নতুনভাবে করতে হবে। এ কার্যক্রমে তাদের যুক্ত করতে হবে। না হলে সঠিক তালিকা হবে না। আমরা যখনই কথা বলি- তখন বিভিন্ন ট্যাগ লাগানো হয়। কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো বিএনপি, কখনো বা জামায়াত বলে ট্যাগ লাগিয়ে মারা হয়।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিনিধি নূর নাহার আলম বলেন, ১২ ধরনের প্রতিবন্ধী রয়েছে। কিন্তু ভোটার তালিকা করার সময় তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করা হয় না। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যালটে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা ও প্রতিবন্ধীদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সুব্যবস্থা করার দাবি করেন তিনি।