অনলাইনে খুবই অল্প সময়ে ঝামেলাহীনভাবে আয়কর বিবরণী দাখিল করা সম্ভব।
এক মাস সময় বৃদ্ধি করায় জরিমানা ছাড়া ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ব্যক্তি করদাতা আয়কর রিটার্ন বা বিবরণী দাখিল করার সুযোগ পেয়েছেন।
এই বছর আয়কর অফিসে সরাসরি রিটার্ন দাখিল করার পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকেও অনলাইনে যে কোনো জায়গা থেকেই রিটার্ন দাখিল করা যাচ্ছে।
যদিও বিগত কয়েক বছর ধরে অনলাইনে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিল করার ব্যবস্থা ছিল। তবে এবারের মতো এতটা প্রচারণা ছিল না। তাছাড়াও সরকারি সকল কর্মচারী এবং কতিপয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরিজীবীদের জন্যও অনলাইনে আয়কর বিবরণী দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
যে মাধ্যমেই আয়কর বিবরণী দাখিল করা হোক না না কেনো, কিছু সাধারণ ধারণা থাকার প্রয়োজন রয়েছে। এ বিষয়ে জানাচ্ছেন ‘ট্যাক্স রিটার্ন প্রিপারেশন: কমপ্লিট গাইড ২০২৪’ বইয়ের লেখক জসীম উদ্দিন রাসেল।
ব্যক্তি করদাতার জন্য প্রযোজ্য যে আয়কর বিবরণী ফর্ম আছে তাতে এই বছর কোনো পরিবর্তন আসেনি। করদাতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে রিটার্ন ফর্ম ডাউনলোড ও প্রিন্ট করে তাতে হাতে লিখে আয়কর বিবরণী দাখিল করতে পারবেন।
আর যদি সফট কপি থাকে তাহলে কম্পিউটারে এডিট করে আয়কর বিবরণী দাখিল করা যাবে।
তবে অন্যান্য বছরের মতো, যদি ‘মেন্যুয়াল’ পদ্ধতিতে নিজেই আয়করের যাবতীয় কাজ করে আয়কর বিবরণী দাখিল করতে চান তাহলে গত বছর থেকে এই বছর যে পরিবর্তনগুলো এসেছে তা জেনে আয়কর হিসেব করতে হবে।
এক্ষেত্রে ভালো ধারণা থাকার প্রয়োজন রয়েছে।
অন্যদিকে যারা এই বছর থেকে অনলাইনে আয়কর বিবরণী দাখিল করবেন তাদের জন্য অনেকটাই সহজ হবে।
যেমন- সারা বছরের আয় থেকে আয়কর আইন অনুযায়ী কতটুকু অংশ অব্যাহতি হিসেবে বাদ দিতে হবে তা না জানলেও আয়কর গণনায় সমস্যা হবে না।
সকল আয়, ব্যয়, সম্পত্তি এবং দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য হাতের কাছে নিয়ে অনলাইনে একে একে বসালেই আয়কর বিবরণী তৈরি হয়ে যাবে।
যদি আগে থেকেই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তাহলে নিজের নামে নিবন্ধিত যে কোনো মোবাইল নাম্বার দিয়ে সহজেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তারপর কিছু তথ্য নির্বাচন করতে হবে।
যেমন- কোন খাতে আয় আছে, সম্পদের তথ্য ইত্যাদি। এসব দেওয়ার পর আয়কর বিবরণীর যে অংশটুকু আপনার জন্য প্রযোজ্য কেবল সেই অংশটুকুই দেখাবে। আর একে একে প্রযোজ্য তথ্য দিলেই আয়কর বিবরণী তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে।
ভুল করলেও চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আয়কর বিবরণী দাখিল করার আগ পর্যন্ত যতবার ইচ্ছা ততবার সংশোধন করা যাবে।
আবার, একবারে না পারলেও যে কোনো সময় যখন সময় পাবেন তখনই পূরণ করে দাখিল করতে পারবেন।
অনলাইনে আয়কর বিবরণী দাখিল করার আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হল- অনলাইনেই কর পরিশোধ করতে পারবেন এবং আয়কর বিবরণী দাখিল করার সাথে সাথেই প্রাপ্তিস্বীকার পত্র পেয়ে যাবেন।
এর বাইরে, যদি সঞ্চয়পত্র থাকে তাহলে সেটা থেকে উৎসে যে কর কর্তন করে রেখেছে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপডেট হয়ে যাবে। সঞ্চয়পত্রের সুদ থেকে যে আয় হয়েছে তা মোট আয়ের সাথে কর গণনায় একটু জটিলতা হত। এখন আর এই জটিলতা তৈরি হবে না।
কারণ সঠিকভাবে তথ্য বসালে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সকল কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
তবে অনলাইনে আয়কর বিবরণী দাখিল করার সময় যে ট্যাক্স দেখাচ্ছে তা সঠিক কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইলে আয়কর সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকতে হবে।
সাধারণত চাকরিজীবী করদাতাদের আয়কর বিবরণী তৈরি করা অনেকটা সহজ। তাই অনলাইনে খুবই অল্প সময়ে ঝামেলাহীনভাবে আয়কর বিবরণী দাখিল করতে পারেন।
অনলাইন রিটার্ন জমার ঠিকানা হলো www.etaxnbr.gov.bd