টঙ্গীর তুরাগতীরে আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা। ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশের অগণিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে সমবেত হয়েছেন।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির মুরব্বি মো. মাহফুজুর রহমান জানান, আজ বাদ ফজর উর্দুতে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়। পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক শূল বয়ান শুরু করেন। বাংলাদেশের মাওলানা নূরুর রহমান এই বয়ান বাংলায় তরজমা করেন। ইজতেমাস্থলের বয়ান মঞ্চ থেকে মূল বয়ান উর্দুতে হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তা বাংলায় তরজমা করা হয়।
শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে ইজতেমা ময়দানে বৃহত্তর জুমার নামাজ আদায় হবে। এতে ইমামতি করবেন কাকরাইলের মাওলানা মো. জোবায়ের।
এবারে ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ৫০টি খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট খিত্তায় নির্দিষ্ট জেলার মুসল্লির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
৬৪টি জেলা থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে মুসল্লিদের কাফেলা এখন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের দিকে। বৃহস্পতিবার থেকে আসতে থাকা মুসল্লিদের ঢল শুক্রবারও অব্যাহত আছে।
শুক্রবার জুম্মার নামাজে লাখো মুসল্লি একসঙ্গে জুম্মার নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি জুম্মার নামাজ আদায় করতে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করবেন।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও আনসারের সদস্যরা কয়েকটি স্তরে বিভক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাব কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে। সিসিটিভি ক্যামেরা মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন।
এবার ইজতেমায় কিছু পরিবর্তন এসেছে। আগে ইজতেমার ব্যবস্থাপনায় থাকতেন মুসল্লিরা, এবার থাকছে প্রশাসন। শুরুর দিকে তিন দিনের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হলেও ব্যাপকসংখ্যক মুসল্লির কথা চিন্তা করে ২০১৫ সাল থেকে দুই পর্বে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্প্রতি মাওলানা জোবায়ের এবং দিল্লির সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি দেখা হয়। তাই প্রশাসনের নির্দেশনায় এবার ইজতেমা হচ্ছে চার দিনের। আজ ও কাল শনিবার জোবায়েরপন্থী মুসল্লিদের এবং ১৭ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি হবে সাদ কান্ধলভীপন্থী মুসল্লিদের ইজতেমা। শনি ও সোমবার হবে আখেরি মোনাজাত।