ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ‘প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের’ অভিযোগ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে এরা একাত্তরের শহীদদের সঙ্গেও ‘প্রতারণা করছে’।
কোনো না কোনো দিন এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে মন্তব্য করে এ বছরের মধ্যেই নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকালে এক আলোচনা সভায় গণফোরামের সভাপতি কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, দেশে ভোট দেওয়ার ‘কোনো সুযোগ নেই’।
“এই যে, মিথ্যাকে সত্য বানানোর যে অপচেষ্টা। ২৯ ডিসেম্বর রাতে কে ভোট দিয়েছে? একজন হাত তোলেন। আমি কাউকে খুঁজে পাইনি। তাহলে ৩০ ডিসেম্বর যে ধন্যবাদ দেওয়া হলো আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত করেছেন। এই যে কাল্পনিক জিনিসের উপরে ১৬ কোটি মানুষের দেশকে শাসন করার ক্ষমতা দাবি করা-এটা একটা দায়িত্বহীন কাজ।
“একাত্তরে লক্ষ-লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে তার বিনিময়ে এই স্বাধীন দেশ হয়েছে। সংবিধানে লেখা আছে, এত লক্ষ শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়েছি। অথচ এভাবে নাগরিকদের অধিকার হরণ করে ক্ষমতা দখল করে শুধু আমাদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে না, শহীদদের সাথে প্রতারণা করছে তারা (সরকার)।”
জনগণকে দেশের ক্ষমতার মালিক করার জন্য একাত্তরের শহীদরা জীবন দিয়েছিলেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত বাংলাদেশের সংবিধানের প্রথমেই লেখা আছে- নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমেই মালিকানার ক্ষমতা প্রয়োগ করা যাবে।
“এই সংবিধানকে উপেক্ষা করে সরকার যে দাবি করছে, ‘আমরা পেয়ে গেছি, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকব’- এটা হতে পারে না।”
এ বছরের মধ্যে নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে কামাল হোসেন বলেন, “আমি বলব, এখন তো কয়েক মাস হয়েছে। দ্রুত নির্বাচনের একটা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, তিন মাস-ছয় মাস যাই হয় এই বছরের মধ্যে একটা প্রকৃত অর্থে দেশে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে যারা প্রকৃত অর্থে নির্বাচিত হবেন, তাদের কাছে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেন।”
নির্বাচনের নামে প্রহসন এদেশের মানুষ মেনে নেবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তাদের কি কোনো জবাবদিহি কোনো দিন কোনো সময় করতে হবে না? আমি বলে দিচ্ছি, আমি বেঁচে নাও থাকলে, আপনারা বেঁচে নাও থাকলে এই ধরনের জিনিসের জবাবদিহি অবশ্যই একদিন বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই আদায় করবে।
“ক্ষমতাকে কাল্পনিকভাবে কেঁড়ে নিয়ে সেটাকে যেনতেনভাবে প্রয়োগ করে দাবি করা তারা জনগণের পক্ষে এটা করছে- তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশের পাঁচার হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন কামাল হোসেন।
গণফোরামের আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক আবদুস সালাম হলে এই আলোচনা সভা হয়। দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক আহমেদের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, রেজা কিবরিয়া, মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আমসা আমীন বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভার পর নিজে সদস্য ফরম পূরণ করে সংগঠনের সদস্যপদ নবায়নের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কামাল হোসেন।