ভর্তি জালিয়াতি, ডিজিটাল জালিয়াতি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরিচিত অভিযোগ। আর এ সমস্যা সমাধানের উপায় হিসেবে উদাহরণ টানা হয় বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তিপদ্ধতির। তবে এবার এসব রথী-মহারথী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপদ্ধতিতেও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। আর এ জালিয়াতিতে টাকার পরিমাণটাও চোখ ছানাবড়া করার মতো—১২ লাখ ডলার যা প্রায় ১১ কোটি টাকার সমপরিমাণ।
অভিযোগটি আনা হয়েছে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ১৫ নম্বরে থাকা ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক ফুটবল কোচসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে।
একটি বিশেষ চক্র কাজ করে এই ভর্তি জালিয়াতির প্রক্রিয়ায়। তারা দুইভাবে জালিয়াতি করে। প্রথমত, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে। দ্বিতীয়ত, খেলোয়াড় কোটার জন্য জাল সনদ তৈরি করে। চক্রটির জালিয়াতি কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য ছিল আইভি লিগ, সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, স্ট্যানফোর্ড এবং জর্জটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আর এসবের হোতা রিক সিঙ্গার নামের এক ব্যক্তি।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সাবেক নারী ফুটবল কোচ রুডি মেরেডিথ দুজন শিক্ষার্থীর জাল খেলোয়াড়ের সনদ দেন। এদের একজন ভর্তির অনুমতি না পেলেও অন্যজন ভর্তির সুযোগ পান। তবে ইয়েল ওই শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশ করেনি।
কোর্টের এক নথির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, শিক্ষার্থীর পরিবার ভর্তি জালিয়াতির জন্য ২০১৭ সালে চক্রের প্রধান হোতা রিক সিঙ্গারকে ১২ লাখ ডলার দেয়। পরে রিক অর্থের অংশ কোচ রুডি মেরেডিথকে পৌঁছে দেন। রুডি শিক্ষার্থীর পোর্টফলিও যাচাই না করেই তাঁদের সনদ দিয়ে দেন।
নথিতে জানা যায়, ২০১৮ সালে ওই শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পর রুডি রিকের থেকে ৪ লাখ ডলারের চেক পান। ২০১৫ সালে থেকে রিক আর রুডির এক মিলিত অপকর্ম চলছিল। রুডি গত বছর ভর্তির বিনিময়ে সাড়ে ৪ লাখ ডলার দাবি করেছিলেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের হাতে ধরা পড়েন তিনি। চলতি সপ্তাহেই তাঁকে আদালতের মুখোমুখি হতে হবে।
তবে জালিয়াতির অভিযোগ এটাই প্রথম নয়। এ মাসের শুরুতে এক শিক্ষার্থীর মা ভর্তিপ্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ এনে ৩৩ জন মাতা-পিতার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এর মধ্যে এক জোড়া মার্কিন তারকাও ছিলেন। তাঁদের একজন এই জালিয়াতির অভিযোগে চাকরিও হারান।