চীন নির্মিত দুটি যুদ্ধ জাহাজ যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে। ‘সংগ্রাম’ ও ‘প্রত্যাশা’ নামের এই দুই জাহাজ আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত বলে নৌবাহিনী জানিয়েছে।
জাহাজ দুটি শনিবার চট্টগ্রাম নেভাল জেটিতে এসে পৌঁছায় বলে নৌবাহিনীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জাহাজ দুটির আগমন উপলক্ষে নেভাল জেটিতে নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও বিপুল সংখ্যক নাবিক উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল আবু আশরাফ সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য নবনির্মিত জাহাজ বানৌজা সংগ্রাম ও বানৌজা প্রত্যাশার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার ও প্রস্থ ১১ মিটার। জাহাজ দুটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম।
এই জাহাজে ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক থ্রিডি রাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, রাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধ সরঞ্জাম রয়েছে।
নৌবাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাহাজ দুটিতে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য ডেক ল্যান্ডিংসহ অন্যান্য সুবিধাও রয়েছে।
গভীর সমুদ্রে দীর্ঘ সময়ব্যাপী মোতায়েনযোগ্য এ জাহাজ দুটির মাধ্যমে বিশাল সমুদ্র এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও জলদস্যূতা রোধ, সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা, সমুদ্র অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার পাশাপাশি তেল, গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দকৃত ব্লকগুলোর অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য দুটি করভেট নির্মাণের লক্ষ্যে চীনের শিপ বিল্ডিং অ্যান্ড অফশোর ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
২০১৬ সালের ৯ অগাস্ট জাহাজ দুটির স্টিল কাটিংয়ে মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং এ বছরের ২৮ মার্চ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে সেগুলো হস্তান্তর করে।
জাহাজ দুটি গত ১২ এপ্রিল চীনের সাংহাই বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। চীনের ইয়ানতিয়ান বন্দর এবং মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর হয়ে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার সমুদ্র পথ পাড়ি দিয়ে সেগুলো চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছে।