ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান দুই আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম।
রোববার রাতে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন তারা। রাত ১টার দিকে তাদের জবানবন্দি দেওয়া শেষ হয়।
পরে রাত দেড়টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) তাহেরুল হক চৌহান।
তিনি জানান, নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যায় সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার এজহারভুক্ত এ দুই আসামি।
এএসপি তাহেরুল হক চৌহান বলেন, পিবিআই এ মামলার দায়িত্ব পাওয়ার চার দিনের মধ্যে (১০-১৪ এপ্রিল) মূলনায়কদের গ্রেফতার করা হয়েছে।তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের কাছে তাদের হাজির করেছেন। আদালত দীর্ঘ সময় ধরে তাদের সিআরপিসির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আসামি দু’জন আদালতের কাছে তাদের স্বীকারোক্তি উপস্থাপন করেছেন। তারা পুরো বিষয়টি খোলাসা করেছেন। কিভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, কারা ঘটিয়েছে, কোন আঙ্গিকে ঘটিয়েছে, বিষয়গুলো উঠে এসেছে। দ্রুত আপনারা বিস্তারিত জানবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, তারা (নুর ও শামীম) অপরাধ স্বীকার করেছেন, হত্যাকাণ্ড তারা ঘটিয়েছেন। কারাগারে বন্দি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার কাছ থেকে তারা হুকুম পেয়েছেন।
তাহেরুল হক চৌহান বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত এখন পর্যন্ত ১৩ জনের কথা বলা হচ্ছে। আরও কিছু নাম বিচ্ছিন্নভাবে এসেছে। আমরা সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি।
যে চারজন আগুন দিয়ে নুসরাতকে পুড়িয়েছে, তারা গ্রেফতার হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকি দুই জনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। খুব শিগগিরই ভালো খবর পাবেন।
গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।