বনানীর এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর রাজধানীর ভবনগুলোর নির্মাণ ও নিরাপত্তা ত্রুটি চিহ্নত করতে মাঠে নেমেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের ২৪টি দল।
রাজউকের একজন কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রাজধানীতে ১০ তলার বেশি উঁচু ভবনগুলোর নকশা পরীক্ষা করতে সোমবার সকাল থেকে রাজউকের আটটি অঞ্চলে একযোগে এই অভিযান শুরু হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ের এই অভিযানে তথ্য সংগ্রহ করার পর তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে এবং পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
তিনি বলেন, রাজউকের একজন করে অথরাইজড অফিসার, সহকারী অথরাইজড অফিসার, প্রধান ইমারত পরিদর্শক ও ইমারত পরিদর্শক আছেন প্রতিটি দলে।
ধানমণ্ডি-লালবাগ অঞ্চল নিয়ে গঠিত রাজউকের অঞ্চল-৫ এর অনুসন্ধান দলের অথরাইজড অফিসার নুরুজ্জামান জহির বলেন, প্রথম দিন দৈনিক বাংলা এলাকায় গেছেন তারা।
“দুপুর পর্যন্ত ৫/৬টি ভবনের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হয়েছে। এর মধ্যে আল আরাফাহ ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, হোটেল হাসান, সুরমা টাওয়ারের তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি।”
জোন-৫ এর পরিচালক শাহ আলম চৌধুরী জানান, দুপুর পর্যন্ত ধানমণ্ডি এলাকায় পাঁচটি ভবনের নকশা সংগ্রহ করেছেন তারা। প্রথম দিনে অন্তত ১০টি ভবনের নকশাসহ অবকাঠামোর বিস্তারিত তথ্য তারা সংগ্রহ করবেন।
১৫ দিনের এ অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলন করে ভবনের ত্রুটি বিচ্যুতির তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
কামরাঙ্গীর চর এলাকা থেকে রাজউকের একজন কর্মকর্তা বলেন, তারা এই এলাকার বিভিন্ন উঁচু ভবনের নকশা খতিয়ে দেখছেন। ওই এলাকার অনেক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে রাজউকের আওতায় আসার আগে। ফলে রাজউকের বদলে অন্যান্য সরকারি দপ্তরের অনুমোদন নিয়ে সেগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।
গত ২৮ মার্চ বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ২৩ তলা এফআর টাওয়ারে আগুন লেগে ২৬ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন অর্ধশতাধিক মানুষ।
সরকারের মন্ত্রীদের তরফ থেকেই বলা হচ্ছে, ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি ২৩ তলা করা হয়েছিল এবং অগ্নি নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা সেখানে ছিল না।
এই পরিস্থিতিতে ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও অগ্নি নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে রাজউকের ২৪টি দল মাঠে নামবে বলে গত শনিবার ঘোষণা দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, “যেসব ভবনে পরিকল্পনা নকশা অনুযায়ী করা হয়নি, সেসব ভবনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। নিয়মের বাইরে যেসব থাকবে সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”