পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনাকে অনভিপ্রেত বলেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
উদ্ভূত ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ বিভাগের এক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে, শ্রমিকরাও কাজে ফিরেছেন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মঙ্গলবার এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যুর পর বাংলাদেশি ও চীনা শ্রমিকদের সংঘর্ষ বাঁধে। তাতে আহত এক চীনা নাগরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বাংলাদেশি কর্মী সাবিন্দ্র দাসকে (৩২) চীনা কর্মীরা লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দিয়েছিল বলে খবর রটলে বাঙালি শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে চীনা কর্মীরা দাবি করেন, অসাবধানতায় নিচে পড়ে গিয়েছিলেন সাবিন্দ্র।
বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত বক্তব্যে বলা হয়, “প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নিহত শ্রমিক সাবিন্দ্র দাস কাজের সময় নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত সকল সরঞ্জাম পরিহিত ছিল। কিন্তু শেষবার তিনি সেফটি বেল্টের হুক যথাস্থানে ভুলবশত স্থাপন না করায় উপর থেকে পড়ে গিয়ে নিহত হন।”
সেখান থেকে ঘটনার সূত্রপাতের পর রাতে শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সৃষ্টি হয়, এতে ১০ জন বাঙালি এবং ছয়জন চীনা শ্রমিক আহত হন বলে মন্ত্রণালয় জানায়।
“চীনা শ্রমিক ঝাং ইয়াং ফাং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। তবে চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।”
আহত চীনা ও বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবস্থা আশঙ্কাজনক না হলেও তাদের সবাইকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে মন্ত্রণালয় জানায়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ এম খোরশেদুল আলম এবং চীন দূতাবাসের দুজন প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মন্ত্রণালয় বলেছে, “বাংলাদেশ ও চীনা শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এসময় প্রতিমন্ত্রী দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাদের নির্দেশ দেন।”
নির্মাণাধীন পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও শ্রমিকের কর্ম পরিবেশ আরও উন্নত করার লক্ষ্যে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, যা অতি শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।