বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি ও দুর্গত বিষয়ে সরকার দৃষ্টি রাখছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরও এ নিয়ে সজাগ ও সচেতন হতে হবে। সুখে-দুঃখে আমরা জনগণের পাশে আছি এবং থাকবো।’ শুক্রবার বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মানুষের বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো, মানুষের কল্যাণে এবং উন্নয়নে কাজ করাই আওয়ামী লীগের নীতি। জাতির পিতার হাতে গড়া এ দলের হাত ধরেই স্বাধীনতা এসেছে। সেই দলকে সুসংগঠিত করে স্বাধীনতার সুফল প্রত্যেক মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবো। আমরা মানুষকে অবহেলা করে কখনও দেশ পরিচালনা করিনি। মানুষের সুখ, দু:খের সাথী হয়ে বিপদে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং মানুষের কল্যাণে এবং উন্নয়নে কাজ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা খুব বড় বড় দেশের মত দৃশ্যত উন্নয়ন হয়তো করতে পারবো না। কিন্তু আমাদের প্রতিটি মানুষই তার জীবনটাকে অর্থবহ করবে, দারিদ্রের হাত থেকে মুক্তি পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে, তাদের জীবনের লক্ষ্যগুলো অন্তত পূরণ হবে। সেইভাবে আমাদের দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে চাই। যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল।’
তিনি এ সময় ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনা স্মরণ করে বলেন, ‘জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে যেভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাতে তিনি জীবিত থাকলে আর ৫/৬ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত হত। কিন্তু, ঘাতকরা তা হতে দেয়নি। তারা জাতির পিতাকে সপরিবারে কেবল হত্যাই করেনি, বরং দেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধূলিসাৎ করে দেশের অগ্রগতির সব পথ রুদ্ধ করে দিতে চেয়েছিল। কারণ জাতির পিতার হত্যাকারীরা কোনদিন এ দেশের স্বাধীনতাতেই বিশ্বাসী ছিল না। তাইতো তারা ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।’
বিএনপি আমলে বন্যায় দুর্গতদের মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা যখন সরকারে ছিল, তখন হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন দুর্যোগে মারা গেছে। তারা মানুষকে ত্রাণসামগ্রী দিতে পারেনি। বন্যার্তদের সহযোগিতা করতে পারেনি। তারা ছিল শুধু নিজেদের আখের গোছানো নিয়ে ব্যস্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ সমর্থন ও ভোট দিয়ে আমাদের সরকারে পাঠিয়েছে বলেই দেশে উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি ধরে রাখতে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তি এবং জনগণের সমর্থন প্রয়োজন। আমি মনে করি, ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর যেভাবে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছে এবং বাংলাদেশে এখন যে জায়গায় এনেছি তার পেছনে মূল শক্তি ছিল দেশের জনগণের সমর্থন। অবশ্যই মহান আল্লাহর একটা রহমতও ছিল। আগামীতে দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চাই তার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন সেই পথগুলো ধাপে ধাপে অতিক্রমের প্রস্তুতি নিতে হবে।’