রোহিঙ্গা সংকট সমাধান এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চালানো নৃশংসতার জন্য দায়ী অপরাধীদের জবাবদিহি আদায়ে দৃঢ় অবস্থানে থাকার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তার দেশের এ অবস্থান তুলে ধরেছেন। সেই সঙ্গে তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। খবর ইউএনবির
পেন্স বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আয়োজিত ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক দ্বিতীয় মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে মূল বক্তব্য দেন বলে শুক্রবার এক সংশোধিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বৈঠকে যোগ দেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র আমন্ত্রণে ৪০ জন পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১০৬ দেশের প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে পম্পেও জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে রয়েছে সবার জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
মার্কিন সংবিধানে প্রতিফলিত হওয়া চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে তিনি যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে অনুপ্রাণিত বাংলাদেশ সর্বস্তরের মানুষের ধর্মীয় অধিকার বজায় রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ধর্মীয় বহুত্ববাদ ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যেকোনো অজুহাতে যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও বৈষম্যের প্রতি কীভাবে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে এবং বাংলাদেশে চরমপন্থার উত্থান সফলভাবে রোধ করেছে তা বিস্তারিত তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর ফলে বাংলাদেশের আর্থ-সামজিক ক্ষেত্রে অসাধারণ উন্নতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া, অসাম্প্রদায়িকতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাশাপাশি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রসার এবং সব ধর্মের মধ্যে মানিয়ে নেয়ার মনোভাব সৃষ্টি করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় স্লোগান ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ প্রচলন করেছেন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য মার্কিন সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
এসব মানুষকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ড. মোমেনের মতে, মাঝে মাঝে নির্দিষ্ট কিছু গণমাধ্যম নির্ধারিত ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘৃণা ও সহিংসতা প্রচার করছে। তিনি ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রসার এবং সেই সূত্রে শান্তি ও স্থিতিশীলতার সমর্থনে গণমাধ্যমগুলোকে গঠনমূলক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি আঞ্চলিক পর্যায়ে একই ধরনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শিগগিরই বাংলাদেশে আয়োজন করার প্রস্তাব দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সম্মেলনের ফাঁকে হাঙ্গেরি, ইরাক, বাহরাইন ও মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।