দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ডিসি সম্মেলন শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনে তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের এই নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিকল্পিতভাবে নিতে হবে।
“দেশকে আমরা দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে চাই। মানুষের জীবনে শান্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের সকল কর্ম পরিকল্পনা আমরা সেভাবে গ্রহণ করি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে যে শুধু অর্থ গ্রহণ করবে সে না, প্রদানকারী এবং গ্রহণকারী উভয়ই সমভাবে দোষী। সেইভাবে দেখতে হবে।”
নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজ করতেও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আপনারা আপনাদের মেধা দিয়ে এই চাকরিতে এসেছেন। আপনার সেই মেধার উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশকে উন্নয়নের জন্য নতুন নতুন কর্মসূচি কীভাবে নেওয়া যায়, সেটাও আপনাদের চিন্তা করতে হবে এবং সে ভাবে আপনারা কাজ করবেন।”
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জমির স্বল্পতা রয়েছে বলে কৃষি উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রেখে যথাযথ পরিকল্পনা নিতে হবে। শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমালের ক্ষতি যেন না হয়, সেদিকে নজর রাখতেও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের আরও একটা উৎপাত আছে সেটা মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ। সেটা মোকাবেলা আমরা করতে পেরেছি সফলভাবে। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের অবস্থা সৃষ্টি না হয় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।”
সরকারের ধারাবাহিকতার উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলেই আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো আজ দৃশ্যমান। যার সুফল দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে। আর এ উন্নয়নটা বাস্তবায়নে আপনাদের বিশেষ অবদান রয়েছে, সেজন্য আমি আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি সব সময় চেষ্টা করেছি, যারা কাজ করবে, সে কাজ করবার মতো একটা উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা। দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে। দেশের উন্নয়ন করতে হবে। এই চিন্তাটা মাথায় রেখেই সকলে কর্ম ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
“আমাদের একটাই লক্ষ্য যে বাংলাদেশে দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম ও ত্যাগের ফসল, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা। আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই দেশ গড়ে উঠবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, সংগঠনের মহাসচিব স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুন প্রমুখ।