রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রয়োজনে টোকিওতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে জাপান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দিয়েছেন সফররত জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো।
বৈঠক শেষে ড. মোমেন সাংবাদিকদের আরও জানান, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো মিয়ানমার সফরে গিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করার জন্য সে দেশের কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাবেন। এ ছাড়া দু’জনের বৈঠকে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
গত কয়েক বছরে জাপানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক ১০৫ গুণ বেড়েছে বলে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে জানিয়েছেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সফর করলেন। এবার তার সফরের মূল লক্ষ্য ছিল রোহিঙ্গা ইস্যু। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে তাদের অবস্থা সরেজমিনে দেখেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হলে এ অঞ্চলে নিরাপত্তা সংকটের সৃষ্টি করবে এবং এর ফলে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ উভয় দেশে জাপানের বিপুল বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের উদ্বেগের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী জানান, জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে যাচ্ছেন। সেখানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানাবেন। প্রয়োজনে টোকিওতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে এ ব্যাপারে বৈঠক আয়োজনেরও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপান রাজনৈতিক সচ্ছিদা দেখাবে বলেও তাদের আলোচনায় উঠে এসেছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময় জাপানি বিনিয়োগে যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানান মন্ত্রী। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এক প্রশ্নে তিনি জানান, জাপান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পদ চায়। বাংলাদেশও চায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদসহ বিভিন্ন সংস্থায় শুধু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ীরা নয়, বরং বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতায় সংস্কার ও নতুন সদস্য পদ দেওয়া হোক।