দেশে বিন্দুমাত্র আইনি সুরক্ষা নেই: শাহ্‌দীন মালিক

sahdin-malik-5d45b286b2fa2

দেশে বিন্দুমাত্র আইনি সুরক্ষা নেই বলে দাবি করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্‌দীন মালিক। তিনি বলেন, আইনে যা কিছু লেখা আছে, সে অনুযায়ী কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বহাল ও জবাবদিহির অভাব অকার্যকর রাষ্ট্রের বড় লক্ষণ। সব মিলিয়ে দেশের অবস্থা নিঃসন্দেহে ভয়াবহ। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে শাহ্‌দীন মালিক এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী সনদের বাস্তবায়নের বিষয়ে ‘বাংলাদেশের সরকারের প্রাথমিক প্রতিবেদন:নির্যাতনবিরোধী কমিটির বক্তব্য ও আমাদের প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি।

নারীপক্ষের সভাপতি শিরিন হকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার জো্যতির্ময় বড়ূয়া, সাজ্জাদ হোসেন, আইনজীবী নুর খান লিটন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহ্‌দীন মালিক বলেন, জবাবদিহি না থাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে কাউকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। নির্যাতন করছে। দীর্ঘ সময় আটক করে রাখছে। এটা কোনো আইনের মধ্যে পড়ে না। তিনি বলেন, গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা বিচারের পরিপন্থি। এসব কাজ করে দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

শাহ্‌দীন মালিক আরও বলেন, জেনেভায় নির্যাতনবিরোধী কমিটির অধিবেশনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন, তা ছিল অবাস্তব। তিনি বলেন, তবুও বলব, দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সময় এসেছে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কথা বলার। অন্যথায় কঠিন পরিণতি হবে।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ূয়া বলেন, দেশে অহরহ গুম, হত্যা, নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এসব প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেই, প্রতিকারেরও উপায় নেই। তাই পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। এসব বিষয় নিয়ে আদালতে গেলে তা বিদ্রুপে পরিণত হয়। তাহলে আমরা যাব কোথায়। তিনি বলেন, কলেজছাত্র রুবেলকে নির্যাতনের পর হত্যার ঘটনায় হাইকোর্ট ১৫ দফা নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা মানা হচ্ছে না। হেলমেট বাহিনী, হাতুড়ি বাহিনী পিটিয়ে হত্যা করছে, অথচ তাদের বিচার হচ্ছে না। আমাদের দেশের আইনগুলো নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। মূল কথা, কাজির গরু সব কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই একটাও।

ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, জেনেভায় দেওয়া সরকারের প্রতিবেদনে অনেক বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সরকারি প্রতিনিধি দল বাস্তবতাকে আড়াল করতে সচেষ্ট ছিল। তবে সুরক্ষা কমিটি মনে করে, ২০ বছর পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া প্রতিবেদন ইতিবাচক। ভবিষ্যতে সরকার মানবাধিকার ও নাগরিক সংগঠনকে নিয়ে কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করবে বলে তারা আশা করেন।

Pin It