বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিভার প্রতিস্থাপন করা সিরাজুল ইসলামের ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে। ঈদুল আজহার দিন বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলেও এতোদিন তা জানা যায়নি।
রোববার বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে সিরাজুলের মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। সিরাজুল ইসলামের মৃত্যুর খবর প্রকাশ না করায় প্রকৃত ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ডেঙ্গুজনিত কারণে সিরাজুলের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ডেঙ্গু নয়, লিভার প্রতিস্থাপনজনিত ত্রুটির কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে মৃত্যু হলে সঙ্গে সঙ্গেই তা প্রকাশ করা হতো।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ূয়া বলেন, সিরাজুলের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে লুকোচুরির কিছু নেই। যখন কেউ জানতে চেয়েছে, আমরা বলেছি; ডেঙ্গুতে সিরাজুলের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একেবারে শেষ পর্যায়ে সিরাজুল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেনি।
উপাচার্য আরও বলেন, লিভার প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ হয়ে সিরাজুল ইসলাম গ্রামের বাড়ি চলে যায়। সেখানে অবস্থানকালে সে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঈদের সময় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার মৃত্যু হয়।
চলতি বছরের ২৪ জুন বিএসএমএমইউ’র হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খানের নেতৃত্বে ৬০ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল সিরাজুলের অস্ত্রোপচারে অংশ নেয়। সকাল ছয়টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ওই অস্ত্রোপচার চলে।
পরে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো সফলভাবে লিভার প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসচিব আসাদুল ইসলামসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ঈদুল আজহার দিন সেই সিরাজুলের মৃত্যু হলেও তা এতোদিন প্রকাশ করেন নি কর্তৃপক্ষ।