এক দিনে আটটি ট্রলারে ৬৫০ দশমিক ৯২৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারের টেকনাফের স্থলবন্দরে এসেছে। আরও দুই হাজার মেট্রিক টনের মতো পেঁয়াজ দুই-তিন দিনের মধ্যে স্থলবন্দরে এসে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে কাস্টমস সুপার আবছার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়ছে। জেটিতে পৌঁছানো পেঁয়াজের ট্রলারগুলো খালাসপ্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে চালান করা হচ্ছে।
এর আগে আজ সোমবার চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে তিন লাখ ৬৪ হাজার কেজি পেঁয়াজ। কনটেইনারে করে আমদানি করা এসব পেঁয়াজ খালাসের প্রক্রিয়া চলছে। আমদানি হওয়া পেঁয়াজ কাল-পরশু থেকে বাজারে চলে আসার কথা।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বলেন, বাজারে দাম পাওয়া গেলে ২০ হাজার মেট্রিক টনের মতো পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে টেকনাফে আসার কথা রয়েছে। তবে পেঁয়াজ পচনশীল দ্রব্য। তাই বৃষ্টির পানি পেঁয়াজে লাগলে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ লোডিং পয়েন্টে এখনো কোনো ধরনের সুব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার বিকেল পর্যন্ত আটটি ট্রলারে করে কয়েকজন ব্যবসায়ীর নামে মিয়ানমার থেকে ৬৫০ দশমিক ৯২৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ নাফ নদীর টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে এসে পৌঁছেছে। শ্রমিকেরা পেঁয়াজগুলো ট্রলার থেকে খালাস করে ট্রাকে বোঝাই করছিলেন। প্রতিটি বস্তায় ৫০ কেজি করে পেঁয়াজ রয়েছে। আর স্থলবন্দর এলাকায় পেঁয়াজভর্তি ট্রাকগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের প্রস্তুতি চলছে। সন্ধ্যার পর থেকে এসব ট্রাক স্থলবন্দর ছেড়ে যাবে।
কয়েকজন আমদানিকারক বলেন, মিয়ানমারের প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪৫ টাকা। এ পেঁয়াজ টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পৌঁছাতে পরিবহন, শ্রমিকসহ সাড়ে পাঁচ টাকার মতো খরচ হচ্ছে।
আমদানিকারক এম এ হাশেম, মোহাম্মদ সেলিম ও নুরুল কায়েস জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত করেছেন। এর মধ্যে মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে দুই হাজার মেট্রিক টনের মতো পেঁয়াজ সমুদ্রপথে রয়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে সেসব পেঁয়াজ স্থলবন্দরে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্থলবন্দর কাস্টমস সূত্র জানায়, ৫ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে প্রথম চালানে ২০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছিলেন মেসার্স এন এইচ এন্টারপ্রাইজের রণজিৎ দাস। এর মধ্যে ১০ থেকে ১২ জন ব্যবসায়ী ৩ হাজার ৫৭৩ দশমিক ১৪১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেছেন, যার আমদানি মূল্য ১৫ কোটি ৫৫ লাখ ২৪ হাজার ৩৫৭ টাকা। এর আগে গত জুলাই মাসে ৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হলেও আগস্ট মাসে কোনো পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে টেকনাফে আসেনি।
এ বিষয়ে স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফের মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার বিকেল পর্যন্ত আটটি ট্রলারে পেঁয়াজ এসে পৌঁছেছে। পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সংকট মেটাতে দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।